7.2 C
London
December 22, 2024
TV3 BANGLA
আমেরিকাশীর্ষ খবর

যুক্তরাষ্ট্রে সুবিধা পাবেন অপ্রাপ্ত বয়সে ঢোকা ১০ লাখ বাংলাদেশি

অপ্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছেন এমন অভিবাসীদের বৈধতার আবেদন মঞ্জুরের জন্য আদালত ট্রাম্প প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। এরফলে যুক্তরাষ্ট্রে অপ্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে ঢোকা ১০ লাখের বেশি অভিবাসী বৈধতা পেতে পারেন বলে জানায় যায়।

শনিবার (৫ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্র সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরীর বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় শীর্ষস্থানীয় দৈনিক প্রথম আলো।

 

জানা যায়, ডেফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভালস (ডাকা) কর্মসূচি নামে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এমন কর্মসূচি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি কর্মসূচিতে অনুমোদন পাওয়া লোকজনের বৈধতার অনুমোদন না বাড়ানোর পক্ষে ট্রাম্প প্রশাসন নির্দেশ জারি করেছিল।

নিউইয়র্কের ইউএস ডিস্ট্রিক্ট জজ নিকোলাস গারাউফিস ৪ নভেম্বর ‘ডাকা’ কর্মসূচিকে আবার চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন। অভিবাসীদের নতুন আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে—এমন নোটিশ দেওয়ার জন্যও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগকে বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন।

২০১৭ সালেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ডাকা’ কর্মসূচির নতুন কোনো আবেদন গ্রহণ বন্ধ করে দেন। এ কর্মসূচিতে আবেদনকারীদের দুই বছরের জন্য কাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসন তা এক বছরের বেশি বৃদ্ধি করা হবে না বলে নির্দেশ জারি করে। বিচারক নতুন আদেশে দুই বছরের জন্য কাজের অনুমতি দেওয়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন।

 

ট্রাম্প প্রশাসনের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি গত জুলাই মাসে এক আদেশে ‘ডাকা’ কর্মসূচিতে আবেদনকারীদের কাজের অনুমতির মেয়াদ এক বছরের করা হবে বলে নির্দেশ দেয়। গত মাসেই নিউইয়র্কের আদালতে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির এমন আদেশ ‘আইনবহির্ভূত’ বলে রায় দেওয়া হয়েছিল।

বিচারক নিকোলাস গারাউফিস তাঁর আদেশে বলেছেন, প্রশাসনকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাতে হবে ‘ডাকা’ কর্মসূচির জন্য নতুন আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে এবং আবেদনকারীদের দুই বছরের কাজের অনুমতির কথাও জানাতে হবে।

 

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত কয়েক বছরে এ আইনের সুফল ভোগ করেছে আট লাখের বেশি নবীন অভিবাসী। বৈধতার আবেদন করে অপেক্ষমাণ প্রায় তিন লাখ নবীন। মার্কিন অভিবাসনপ্রক্রিয়ায় প্রবেশের জন্য সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১২ সালে ‘ডাকা’ কর্মসূচি চালু করেছিলেন। অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং নিবন্ধন নেই—এমন অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে সুরক্ষা দেওয়ার জন্যই এ আইন করা হয়। সুরক্ষার এই বিধান কার্যকর করার নির্দেশ মানেই ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর এক ধাক্কা।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ‘ডাকা’ কর্মসূচি সম্পূর্ণ বন্ধ করার নির্দেশ জারি করেন। ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন সংকোচন কর্মসূচির অংশ হিসেবে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তাঁর এ অভিবাসনবিরোধী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অভিবাসী গ্রুপগুলো একাধিক মামলা দায়ের করে।

‘ডাকা’ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তকে যেসব আইনজীবী চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, তাঁরা স্বভাবতই এ রায়ে খুশি। এমন একজন ক্যারেন টামলিন। তিনি জাস্টিস অ্যাকশন সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। ক্যারেন নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, ‘ডাকার সুবিধা পাওয়া নবীন অভিবাসীদের জন্য এটি একটি বিশেষ দিন।’

 

এ রায়ে খুশি যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশিরা। যুক্তরাষ্ট্র সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী ‘ডাকা’ কর্মসূচি নিয়ে আদালতের রায়কে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া অভিবাসননীতির বিরুদ্ধে অভিবাসীদের বিজয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। আজ প্রথম আলোর কাছে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে অ্যাটর্নি মঈন বলেন, এ রায়ের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে অপ্রাপ্ত বয়সে আসা কয়েক হাজার বাংলাদেশিও সুবিধা পাবে।

নিউইয়র্কে তিন দশক থেকে বসবাস করছেন সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান। ‘ডাকা’ কর্মসূচি নিয়ে আদালতের রায় যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বাংলাদেশিদের ওপর কী প্রভাব ফেলবে—এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সংগত কারণে আমাদের হাতে সঠিক সংখ্যা নেই। তবে প্রতিবছরই বিভিন্নভাবে অপ্রাপ্ত বয়স্করা কখনো মা–বাবা সঙ্গে, কখনো আদম পাচারের শিকারসহ নানাভাবে আমেরিকায় ঢুকে থেকে। এ সংখ্যা কয়েক হাজার হবে।’

মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, অপ্রাপ্ত বয়সে আমেরিকায় আসা এসব অভিবাসী বৈধতার পথে অন্তর্ভুক্ত হলে তারা কাজ করতে পারবে। স্কুল–কলেজে সহজেই ভর্তি হতে পারবে।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ মামলার এ রায় নিয়ে আপিল করতে পরবে। ট্রাম্প প্রশাসনের শেষ সময়ে এ নিয়ে প্রশাসন আদৌ আপিল করতে যাবে কি না, তা জানা যায়নি।

 

নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন আগামী ২০ জানুয়ারি। জো বাইডেন আগেই বলেছেন, তিনি ক্ষমতা গ্রহণের ১০০ দিনের মধ্যেই ‘ডাকা’ কর্মসূচি চালু রাখবেন এবং অভিবাসন সংস্কার আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য কংগ্রেসকে বলবেন।

 

সূত্র: প্রথম আলো
৫ ডিসেম্বর ২০২০
নিউজ ডেস্ক

আরো পড়ুন

আগে মন্দার কথা বললেও এবার বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির কথা জানালো আইএমএফ

নিউজ ডেস্ক

রাজপরিবারের ওয়েবসাইট হতে মুছে দেয়া হল প্রিন্স হ্যারির সম্মানসূচক পদবি

উচ্চ সুদের হারে ভুগছে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি