TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

‘রাজকীয় মর্যাদা হারিয়ে সাধারণ নাগরিক’: প্রিন্স অ্যান্ড্রুকে যুক্তরাষ্ট্রে জিজ্ঞাসাবাদে সহযোগিতার আহ্বান

যুক্তরাজ্যের রাজা চার্লসের ভাই অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন উইনজর, যিনি একসময় ডিউক অব ইয়র্ক নামে পরিচিত ছিলেন, এখন থেকে আর কোনো রাজকীয় উপাধি ব্যবহার করতে পারবেন না। রাজা আনুষ্ঠানিকভাবে তার সব উপাধি ও সম্মান বাতিল করেছেন। বাকিংহাম প্রাসাদ নিশ্চিত করেছে যে অ্যান্ড্রুর নাম অভিজাতদের সরকারি তালিকা (roll of the peerage) থেকেও মুছে ফেলা হয়েছে—যা তার জনজীবনের অবসানকে চিহ্নিত করছে।
অ্যান্ড্রু উইনজরের জন্য রাজা চার্লস ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা রাখবেন, তবে তিনি এখন আর উইনজরের রয়্যাল লজে থাকতে পারবেন না। রাজকীয় বাসভবন ছেড়ে তাকে নরফোকে স্যান্ড্রিংহাম এস্টেটে একটি ব্যক্তিগত বাড়িতে স্থানান্তরিত হতে হবে। অ্যান্ড্রুর সাবেক স্ত্রী সারা ফার্গুসন ও দুই কন্যা প্রিন্সেস ইউজিনি ও বিট্রিস তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় থাকবেন। রাজকন্যারা তাদের উপাধি ধরে রাখবেন, কারণ তারা একজন রাজা-সন্তানের কন্যা, যা ১৯১৭ সালের রাজা জর্জ পঞ্চমের letters patent দ্বারা নির্ধারিত।
ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে রাজা চার্লসের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী ক্রিস ব্রায়ান্ট বিবিসি ব্রেকফাস্টে বলেন, “দেশের অধিকাংশ মানুষই এই পদক্ষেপকে সঠিক মনে করছেন।” তিনি আরও বলেন, “অ্যান্ড্রু এখন একজন সাধারণ নাগরিক। সুতরাং, যদি যুক্তরাষ্ট্র কোনো প্রশ্নের জবাব চায়, তার উচিত তা দিতে যাওয়া—যেমনটি একজন সাধারণ নাগরিকের করা উচিত।” ব্রায়ান্টের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কমিটি যদি তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আহ্বান করে, তবে অ্যান্ড্রুর উচিত সেই আহ্বানে সাড়া দেওয়া।
সূত্র জানায়, রাজা চার্লসের এই কঠোর সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ ছিল অ্যান্ড্রুর গুরুতর বিচারবুদ্ধির ব্যর্থতা—বিশেষ করে জেফ্রি এপস্টেইনের সঙ্গে তার সম্পর্ক। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, অ্যান্ড্রু তার নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে ভার্জিনিয়া জিউফ্রে নামের অভিযোগকারীর পটভূমি যাচাই করতে বলেছিলেন। আবার ফাঁস হওয়া এক ইমেইলে দেখা যায়, ২০১০ সালের পরও তিনি এপস্টেইনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন—যা তিনি পূর্বে অস্বীকার করেছিলেন। এমনকি প্রিন্সেস বিট্রিসের জন্মদিনে হার্ভি ওয়াইনস্টিন, গিসলেইন ম্যাক্সওয়েল ও এপস্টেইনের উপস্থিতিতে তোলা ছবি নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছে।
রাজা চার্লস সংসদের মাধ্যমে নয়, বরং royal prerogative বা রাজকীয় বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে অ্যান্ড্রুর dukedom বাতিল করেন, যাতে সংসদের সময় নষ্ট না হয়। এদিকে Public Accounts Committee রয়্যাল লজের ৭৫ বছরের লিজ চুক্তি নিয়ে তদন্তমূলক প্রশ্ন পাঠিয়েছে ক্রাউন এস্টেটকে।
অন্যদিকে, ভার্জিনিয়া জিউফ্রের পরিবার বিবিসিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “তিনি কখনোই ন্যায়বিচারের লড়াই থামাননি।” তারা আরও বলেছেন, “আজ এক সাধারণ আমেরিকান মেয়ে নিজের সত্য ও সাহস দিয়ে এক ব্রিটিশ রাজপুত্রকে নত করতে সক্ষম হয়েছে।”
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে

আরো পড়ুন

অনিবন্ধিত অভিবাসী সন্দেহে হোম অফিস কর্মী গ্রেফতার

যুক্তরাজ্যের কেয়ার ভিসা জালিয়াতিতে ধ্বংস হয়েছে অনেক স্বপ্ন

টিউলিপকে বাঁচাতে গিয়ে কি ফাঁসতে যাচ্ছেন কেয়ার স্টারমার!