TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

রাস্তায় দাঁড়াতেই পারেনি কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ.লীগঃ বড় প্রভাব ছিল না ‘লকডাউনের’

শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করা হবে ১৭ নভেম্বর। বৃহস্পতিবার এ তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। তারিখ নির্ধারণের দিনটিকে ঘিরে কয়েকদিন ধরে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় ‘লকডাউন’ কর্মসূচি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চালানো হয় ব্যাপক অপপ্রচার। তবে বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে লকডাউনের তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। কোথাও রাস্তায় দাঁড়াতেই পারেনি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। রাজপথ দখলে ছিল ছাত্র-জনতা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। মোড়ে মোড়ে লাঠি হাতে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।

এদিকে নিরাপত্তার চাদরে মোড়ানো ছিল ট্রাইব্যুনাল এলাকাসহ পুরো রাজধানী। ঢাকার প্রতিটি প্রবেশপথে ছিল র‌্যাব-পুলিশ-বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের কড়া পাহারা। তল্লাশি ছাড়া এদিন ঢাকায় প্রবেশ করতে পারেনি কোনো যানবাহন। প্রতিটি মোড়ে ছিল আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সতর্ক অবস্থান। সড়কের বিভিন্ন স্থানে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে কাগজপত্র পরীক্ষা করতে দেখা গেছে।

প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনসহ কেপিআইভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছিল কয়েক গুণ। ঢাকায় সকালের দিকে দূরপাল্লার বাস কম চলাচল করলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে বাস চলাচল। নাশকতার চেষ্টার অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সারা দেশেও ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। তবে এর মধ্যেও কয়েকটি স্থানে বিচ্ছিন্ন কিছু নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। ফরিদপুরের ভাঙ্গায় চার স্থানে লগি-বৈঠা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এতে ২১ জেলার যান চলাচল কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়।

শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে যাত্রীবাহী বাসসহ তিনটি যানবাহনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনীতে রেললাইনে আগুন এবং বগুড়ায় দুটি ফিশপ্লেট খুলে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মাদারীপুরের শিবচরে ককটেল বিস্ফোরণে বিএনপির ৭ কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। পুলিশ বিভিন্ন স্থান থেকে ৩২টি পেট্রোলবোমা উদ্ধার ও ৭ জনকে আটক করেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, যে কোনো ধরনের নাশকতা ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ ও সুপ্রিমকোর্টের প্রধান প্রবেশপথগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের সমন্বয়ে কয়েক স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে। সেখানে প্রস্তুত ছিল ডিএমপির সাঁজোয়া যান। সেনাবাহিনীকেও ওই এলাকায় টহল দিতে দেখা যায়।

ট্রাইব্যুনাল এলাকা ছাড়াও পুরো হাইকোর্ট এবং সুপ্রিমকোর্টের আশপাশের সব গেটে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ এবং এপিবিএন সদস্য মোতায়েন দেখা গেছে। প্রবেশপথগুলোতে এপিসিসহ অত্যাধুনিক নিরাপত্তা সরঞ্জাম প্রস্তুত ছিল। ভেতরে প্রবেশের আগে গণমাধ্যমকর্মী এবং মামলা সংশ্লিষ্ট সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে তল্লাশির মুখে পড়তে হয়েছে। এদিন ট্রাইব্যুনালের আশপাশ এলাকায় সাধারণ মানুষের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। অপরিচিত কেউ যাতে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে কঠোর সতর্কতা বজায় রাখা হয়। শুধু তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিরাই ভেতরে প্রবেশের অনুমতি পান।

মিরপুরের বাসিন্দা আবুল আসাদ বলেন, মিরপুর ১০ নম্বর থেকে বৃহস্পতিবার সকালে মোটরসাইকেলে হাইকোর্ট এলাকায় আসতে চার দফা তল্লাশির মুখে পড়তে হয়েছে তাকে।

সূত্রঃ যুগান্তর

এম.কে

আরো পড়ুন

বাংলাদেশের পরিস্থিতি জানেন না, তাড়াহুড়োর কী ছিলঃ মোদিকে মমতা

সচিবালয়ে প্রবেশের অস্থায়ী সব পাস বাতিল, ঢুকতে পারবেন না সাংবাদিকরাও

নিউজ ডেস্ক

সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন গ্রেপ্তার