যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ডানপন্থী টোরি সংসদ সদস্যদের দ্বারা ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে রয়েছেন। বর্তমান সরকার দলীয় অনেক সাংসদরা চায় অবৈধ আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডায় প্রেরণ করা। তাই প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডা প্রেরণে সফলতা আনতে একটি মূল মানবাধিকার আইনকে এড়িয়ে যাবার কথা বিবেচনা করছেন বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়।
প্রধানমন্ত্রীর মূল অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে আইনী চ্যালেঞ্জগুলি হ্রাস করতে মানবাধিকার আইনকে এড়িয়ে যাওয়ার কথা ভাবলেও বর্তমান সরকারের মন্ত্রীরা সচেতন আছেন এই ব্যাপারে যে কোনো প্রস্তাব উত্থাপন হলে হাউস অব লর্ডস ও কমন্সে বাতিল হয়ে যেতে পারে।
কনজারভেটিভ দলীয় সূত্র হতে জানা গিয়েছে, যদি প্রস্তাব হাউস অব কমন্সে মুখ থুবড়ে পড়ে তাহলে দলে ভাঙ্গন দেখা দিতে পারে। বেশ কয়েকজন মন্ত্রী দলত্যাগ করারও সম্ভাবনা রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারক বলেন, পূর্ব আফ্রিকার দেশে অভিবাসীদের প্রেরণ করার প্রস্তাব সরকারের বিচক্ষণতার বহিঃপ্রকাশ নয়। সরকারের উচিত ভাবা যে এই প্রস্তাব মৃতপ্রায়, তাকে সরকারের আর জাগানো উচিত নয়।
ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে শরণার্থী প্রবেশের সঙ্কটের কারণে বিশাল চাপে আছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী। তাছাড়া কনজারভেটিভ দলের অনেক সাংসদ চান নির্বাচনের আগে কিগালির উদ্দেশ্যে একটি ফ্লাইট ছেড়ে যাওয়া অন্তত জরুরি। তাই সবকিছু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী রক্ষণশীল অধিকারীদের দ্বারা তীব্র চাপের মধ্যে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারক লর্ড সোপেশন রুয়ান্ডা পরিকল্পনার বিষয়ে বলেছেন, ” আমি মনে করি বর্তমান রুয়ান্ডা স্কিমটি সম্ভবত মারা গেছে, তবে এই আইন বা এই নতুন চুক্তিটি কেমন হতে পারে তা না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের অবশ্যই রায় স্থগিত করতে হবে।”
তিনি আরও পরামর্শ দিতে গিয়ে বলেন, স্ট্রেসবার্গের বিচারকরা ইউকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির অনুরূপ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই আসবেন। যার কারণে ফলাফল সেই একই হবে।
জুলাই মাসে অবৈধ অভিবাসন আইন পাস হওয়ার পরে যুক্তরাজ্যে আগত কয়েক হাজার মানুষের আশ্রয় দাবি প্রক্রিয়া নিয়ে ইমিগ্রেশন মন্ত্রী ও হোম অফিস মারাত্মক চাপে রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যুক্তরাজ্যের সরকারের মন্ত্রীরা জাতিসংঘের শরণার্থী আইন চাইলেই লঙ্ঘন করতে পারে না। তাই আশ্রয়প্রার্থীদের অনির্দিষ্টকালের জন্য তৃতীয় কোনো দেশে সরানোর কোনো সম্ভাবনা নেই।
উল্লেখ্য যে, এই বিষয় নিয়ে টেন ডাউনিং স্ট্রিটের সাথে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়।
সূত্রঃ গার্ডিয়ান
এম.কে
২০ নভেম্বর ২০২৩