রুয়ান্ডার সরকার একজন প্রবীণ মানবাধিকার গবেষককে রুয়ান্ডায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কিগালি অভিযোগ করে স্বাধীন তদন্তের নামে বিভিন্ন ব্যক্তির রুয়ান্ডা প্রবেশের প্রচেষ্টা রুখে দিয়েছে তারা। এই ঘটনা তখন ঘটল যখন প্রথমবারের মতো আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডা প্রেরণের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য সরকার সংসদে আইন পাশ করতে সক্ষম হয়েছে।
রুয়ান্ডার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ ১৩ ই মে কিগালি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর হিউম্যান রাইটস ওয়াচের আফ্রিকা বিভাগের সিনিয়র গবেষক ক্লিমেন্টাইন ডি মন্টজয়েকে রুয়ান্ডায় প্রবেশে বাঁধা প্রদান করে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের ভাষ্যমতে পূর্ব আফ্রিকান দেশটির সরকার হিউম্যান রাইটস ওয়াচের কর্মকর্তাকে বাঁধা প্রদান করার কাজকে সঠিক বলে প্রমাণ করার জন্য এইচআরডাব্লু এর উপর বানোয়াট অভিযোগ আনে। রুয়ান্ডা সরকারের মতে ৯০ টিরও বেশি দেশে কাজ করা এইচআরডাব্লু নানা দেশে বানোয়াট গবেষণা পরিচালনা করে থাকে। যে পদক্ষেপগুলি সেই দেশের সরকারের বিরুদ্ধে তারা পরবর্তীতে ব্যবহার করে বলেও অভিযোগ রয়েছে রুয়ান্ডা সরকারের।
মিসেস ডি মন্টজয়ে বিদেশী দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকের জন্য রুয়ান্ডাতে ভ্রমণ করতে চেয়েছিলেন। তবে তাকে বিমানবন্দরে জানানো হয় তিনি রুয়ান্ডাতে স্বাগত নন। কেনিয়া এয়ারওয়েজকে ডি মন্টজয়ে নামক প্রবীণ মানবাধিকার কর্মীকে বিমানবন্দর হতে বিতাড়নের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এইচআরডাব্লুয়ের নির্বাহী পরিচালক তিরানা হাসান রুয়ান্ডা সরকারের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানান।
তিরানা হাসান বলেন, ” রুয়ান্ডা নিজেকে একটি উন্মুক্ত ও নিরাপদ গন্তব্য হিসাবে চিহ্নিত করে। তবে একজন স্বাধীন মানবাধিকার কর্মীকে তাদের দেশে প্রবেশ করতে না দিয়ে তারা প্রমাণ করেছে তাদের দেশের ভিতরে মানবাধিকার বিরোধী কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তাই তারা ভয়ে রুয়ান্ডাতে মানবাধিকার পর্যবেক্ষককে প্রবেশ করতে দেয় নাই।”
ফরাসী ও ব্রিটিশ নাগরিক ডি মন্টজয়ে রুয়ান্ডার সরকারকে তার ভ্রমণ পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করেছিলেন। ২৯ শে এপ্রিল এবং ৭ মে দুই দফা রুয়ান্ডার সরকারকে এইচআরডাব্লু’র বৈঠক সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল।কিন্তু রুয়ান্ডা সরকারের পক্ষ হতে কোনো প্রতিক্রিয়া বা উত্তর জানায় নাই বলে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানা যায়।
এইচআরডাব্লু এক বিবৃতিতে জানায়, ডি মন্টজয়েকে রুয়ান্ডায় প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা প্রমাণ করে যুক্তরাজ্যের রুয়ান্ডা স্কিম কখনই সঠিক ছিল না। তাই এইচআরডাব্লু রুয়ান্ডা স্কিম নিয়ে নতুনভাবে প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।
উল্লেখ্য যে, যুক্তরাজ্যের রুয়ান্ডা পরিকল্পনাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন ডানকান লুইস সলিসিটরের তৌফিক হোসেন।
আইনজীবী তৌফিক হোসেন বলেন, “ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ একটি অত্যন্ত সম্মানিত স্বাধীন বৈশ্বিক সংস্থা। একজন মানবাধিকার কর্মীকে রুয়ান্ডায় প্রবেশ করতে না দেওয়া নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ইউএনএইচসিআর এর মতো সংস্থাগুলি রুয়ান্ডার সুরক্ষা এবং মানবাধিকার রেকর্ড সম্পর্কে গুরুতর উদ্বেগ জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন হতে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
২০ মে ২০২৪