8.6 C
London
November 17, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

রুয়ান্ডা নীতি নিয়ে অপ্রকাশিত ফাইল প্রকাশিত হয়েছে যুক্তরাজ্যে

যুক্তরাজ্য সরকারের রুয়ান্ডানীতিতে রুয়ান্ডায় আশ্রয়প্রার্থীদের প্রেরণের জন্য ফ্ল্যাগশিপ পরিকল্পনায় প্রথম ৩০০ জনের প্রতিজনের জন্য করদাতাদের ১.৮ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করবে। সরকার কিগালিতে আশ্রয়প্রার্থীদের নির্বাসনে পাঠাতে যে খরচ এই হিসাব উন্মোচন করেছে হোয়াইটহলের একটি ওয়াচডগ প্রতিষ্ঠান।

জাতীয় নিরীক্ষা অফিসে প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে এই প্রকল্পের সামগ্রিক ব্যয় অর্ধ বিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি দাঁড়িয়েছে। এমনকি যুক্তরাজ্য হতে যদি কোনো আশ্রয়প্রার্থীকে রুয়ান্ডায় পাঠানো না হয় তাহলেও সুনাক সরকার ৩৭০ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ বহন করার চুক্তি সাক্ষর করেছে।

দীর্ঘদিন “বাণিজ্যিক গোপনীয়তা” দেখিয়ে এই চুক্তিটির খরচের ব্যয় ব্যাখ্যা করতে অপারগতা প্রকাশ করে আসছিলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী, হোম সচিব এবং সিনিয়র হোম অফিসের কর্মকর্তারা।

ইউরোপীয় ও যুক্তরাজ্যের আইনের বিভিন্ন মারপ্যাঁচ ও বারবার আইনীয় চ্যালেঞ্জের কারণে এখন পর্যন্ত রুয়ান্ডায় কোনও আশ্রয়প্রার্থীকে প্রেরণ করা যায়নি।

হোম অ্যাফেয়ার্স সিলেক্ট কমিটির চেয়ারম্যান ডায়ানা জনসন চূড়ান্ত খরচের হিসাব দেখে চমকে যান এবং এই বিল নিয়ে স্বচ্ছতার অভাব দেখে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

লেবার দলীয় সাংসদ জনসন বলেন, “ এই খরচের হিসাব বিস্ময় জাগানিয়া, দামী হোটেলে আবাসন ব্যয়ের তুলনায়ও এই ব্যয় বেশি তাহলে প্রশ্ন থেকে যায় কিভাবে এই চুক্তিটি সস্তা হল। অনুভব করা যাচ্ছে যে এটা একটি ব্যয়বহুল প্রজেক্ট কিন্তু দেশের কোনো লাভ তাতে হচ্ছে না। সরকার যদি পরিস্থিতি অনুধাবন করতে না পারে এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকা বাঁচানোর চিন্তা না করে তাহলে অযথা শুধু অর্থ খরচ হবে কিন্তু কিছুই অর্জন করবে না।”

অডিটররা জানিয়েছেন, হোম অফিস রুয়ান্ডা সরকারকে দুই ধরণের প্রত্যক্ষ অর্থ প্রদান করতে সম্মত হয়েছে। যুক্তরাজ্য অর্থনৈতিক রূপান্তর ও ইন্টিগ্রেশন ফান্ডকে (ইটিআইএফ) অর্থ প্রদান করবে, যা রুয়ান্ডায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সমর্থন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। রুয়ান্ডায় স্থানান্তরিত ব্যক্তিদের জন্য আশ্রয় প্রক্রিয়াকরণ এবং অপারেশনাল ব্যয়গুলি কভার করার জন্যও অর্থ প্রদান করবে।

চুক্তির শর্ত মোতাবেক যুক্তরাজ্যের হোম অফিস ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে ইটিআইএফ-তে ২২০ মিলিয়ন পাউন্ড প্রদান করেছে। তাছাড়া ২০২৪-২৫ সালে আরও ৫০ মিলিয়ন পাউন্ড, ২০২৫-২৬ সালে ৫০ মিলিয়ন পাউন্ড এবং ২০২৬-২৭ সালে ৫০ মিলিয়ন পাউন্ড প্রদান করবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি স্থানান্তরিত ব্যক্তির জন্য “পাঁচ বছরের প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং ইন্টিগ্রেশন প্যাকেজ”, যাতে আবাসন, খাদ্য, চিকিৎসা পরিষেবা, শিক্ষা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। রিপোর্টে বলা হয়েছে প্রতিটি নির্বাসিত আশ্রয়প্রার্থী ব্যক্তির জন্য ১,৫০,৮৭৪ পাউন্ড ব্যয় হবে।

পরিসংখ্যান ও তথ্যানুযায়ী আরো জানা যায় যুক্তরাজ্য যদি ৩০০ জনকে রুয়ান্ডায় প্রেরণ করে তবে অংশীদারিত্বের অধীনে করদাতাকে ৪৯০ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করতে হবে। এছাড়া আরো অতিরিক্ত ৬ মিলিয়ন পাউন্ড স্বতন্ত্র অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে এবং ৪৫ মিলিয়ন পাউন্ড প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং অপারেশনাল ব্যয়ের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট খরচ দাঁড়ায় ৫৪১ মিলিয়ন পাউন্ড। যা ৩০০ জন আশ্রয়প্রার্থীদের হিসাবে ১.৮ মিলিয়ন পাউন্ড প্রতিজনের জন্য গড়ে নির্ধারণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, হোমঅফিস রুয়ান্ডা স্কিম স্থাপনের জন্য ২০ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করেছে, যা তিন প্রধানমন্ত্রী – বরিস জনসন, লিজ ট্রাস এবং ঋষি সুনাকের আমল সহ। তাছাড়া চার হোম সেক্রেটারি প্রীতি প্যাটেল, সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান, গ্রান্ট শ্যাপস এবং জেমস ক্লিভারলি বিভিন্ন সময়ে এই প্রকল্পটির তদারকি চালিয়েছেন।

তাছাড়া চুক্তিতে উল্লেখ আছে, যদি রুয়ান্ডান সরকার এই চুক্তিটি ভঙ্গ করে তবে যুক্তরাজ্য সেই বছর থেকে অর্থ প্রদান বন্ধ করতে পারবে। তবে আগের বছরগুলিতে প্রদান করা অর্থ ফেরত দিবে না রুয়ান্ডা সরকার।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
০১ মার্চ ২০২৪

আরো পড়ুন

নির্বাচন 2024 ইশতেহার: ইউকে প্রপার্টি মার্কেট

নিউজ ডেস্ক

রুয়ান্ডানীতির কারণে বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে যুক্তরাজ্য ;

ইউকেতে করোনা ভাইরাসের “ভুয়া” সনদ!