3.3 C
London
January 19, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

রুয়ান্ডা প্রকল্পের নামে ১৩৪ মিলিয়ন ফান্ড ধ্বংস করেছে কনজার্ভেটিভ সরকারঃ রিপোর্ট

কনজারভেটিভরা ব্যর্থ রুয়ান্ডা প্রকল্পের জন্য £১৩৪ মিলিয়ন খরচ করেছে, যা কখনোই ব্যবহৃত হয়নি বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে জানা যায়।

কনজারভেটিভ সরকার রুয়ান্ডায় আশ্রয়প্রার্থীদের পাঠানোর পরিকল্পনার জন্য £১৩০ মিলিয়নের বেশি খরচ করেছে আইটি এবং ডেটা সিস্টেমে, যা কখনোই কার্যকর হবে না বলে অবজারভার প্রকাশ করেছে।

এই জোরপূর্বক অপসারণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ডিজিটাল টুলগুলোর ব্যয় ছিল £৭১৫ মিলিয়ন পাউন্ড। যেখান হতে £২৯০ মিলিয়ন পাউন্ড সরাসরি রুয়ান্ডার সরকারকে দেওয়া হয়েছিল।

এর মধ্যে একটি ডাটাবেস, যা একটি “পর্যবেক্ষণ কমিটি”র সম্ভাব্য অভিযোগ পরিচালনার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। যেটি মানবাধিকার আইন মেনে চুক্তিটি পর্যবেক্ষণের জন্য স্থাপন করা হয়। এছাড়া ক্ষুদ্র নৌকায় আসা আশ্রয়প্রার্থীদের দেশত্যাগ করানোর জন্য আইনি কর্তব্য বাস্তবায়নের খরচও  অন্তর্ভুক্ত ছিল এতে।

লেবার সরকার সাধারণ নির্বাচনে জয়ের পরপরই এই নীতিটি বাতিলের ঘোষণা দেয়। হোম সেক্রেটারি ইভেট কুপার এটিকে “করদাতাদের অর্থের সবচেয়ে বড় অপচয়” বলে আখ্যা দিয়েছেন।

একজন হোম অফিস কর্মকর্তা জানান, তথ্য সুরক্ষা আইন ব্যয়ের বৃদ্ধি ঘটিয়েছে। রুয়ান্ডার কর্তৃপক্ষের কাছে বায়োমেট্রিক তথ্য (যেমন আঙুলের ছাপ) পাঠানোর জন্য নতুন সিস্টেমের জন্য অতিরিক্ত অর্থ খরচ করা হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, “যদি মানুষ রুয়ান্ডায় পাঠানো হতো এবং তাদের আবেদন প্রক্রিয়াধীন থাকতো, তবে তাদের রুয়ান্ডায় থেকে সিদ্ধান্তের পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। যদি তাদের আবেদন সফল হতো, তবে তাদের যুক্তরাজ্যে ফিরিয়ে আনতে ভিসা ও পরিবহন ব্যবস্থার জন্য অবকাঠামো তৈরি করতেও খরচ করা হয়েছে।”

পূর্বের হোম সেক্রেটারি প্রীতি প্যাটেল এবং রুয়ান্ডার তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিনসেন্ট বিরুটা ২০২২ সালের এপ্রিলে কিগালিতে রুয়ান্ডা চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছিলেন।

তথ্য অধিকার আইনের অধীনে অবজারভার-এর মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রুয়ান্ডা প্রকল্পে সরাসরি কাজ করা কর্মীদের জন্য £৮৭ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করা হয়েছিল।

২০২২ সালের পর থেকে “প্রোগ্রাম ও আইনি ব্যয়” হিসেবে আরও £৫৭ মিলিয়ন খরচ করা হয়। এর মধ্যে ছিল আদালতের লড়াইয়ের ব্যয়, যেখানে সুপ্রিম কোর্ট ২০২৩ সালে রুয়ান্ডা প্রকল্পকে অবৈধ ঘোষণা করে।

এই প্রকল্পের জন্য আগে প্রকাশিত খরচের মধ্যে £৯৫ মিলিয়ন পাউন্ড অভিবাসন কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। ২০২২ সালের জুন মাসে পরিকল্পিত ফ্লাইট এবং অন্যান্য ফ্লাইটের প্রস্তুতির জন্য £৫০ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করা হয়।

পাবলিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল সার্ভিসেস (PCS) ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফ্রান হিথকোট বলেছেন, “এই বিশাল পরিমাণ অর্থ পরিকল্পনাভাবে ইংলিশ চ্যানেলের নৌকা পারাপারের জন্য একটি নিরাপদ ও মানবিক সমাধান প্রদানে ব্যয় করা যেত।”

রুয়ান্ডা প্রকল্পের অধীনে কেবলমাত্র চারজন অবৈধ অভিবাসী কিগালিতে গিয়েছিলেন। তাদের প্রত্যেককে স্বেচ্ছায় যুক্তরাজ্য ছাড়ার জন্য £৩,০০০ দেওয়া হয়েছিল এবং তাদেরকে সম্পূর্ণ সমর্থন প্যাকেজের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।

উল্লেখ্য যে, প্রকল্প ঘোষণার বছর হতে ছোট নৌকায় অভিবাসীদের পারাপারের সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে এবং পরবর্তী সময়ে চ্যানেলে মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েছে। ২০২৪ সালে অন্তত ৭৮ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে।

যদিও কনজার্ভেটিভ দলের ছায়া হোম সেক্রেটারি ক্রিস ফিলপ বলেন, “এই লেবার সরকার চ্যানেল পারাপার বন্ধের জন্য কার্যকর কোনো পরিকল্পনা না করেই আমাদের নীতিটি বাতিল করেছে।”

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
১৯ জানুয়ারি ২০২৫

আরো পড়ুন

ব্রিটে‌নে ফি‌লি‌স্তি‌নের প‌ক্ষে লা‌খো মানুষের পি‌টিশন উঠ‌ছে সংস‌দে

ব্রিটিশ প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের মামলা

অনলাইন ডেস্ক

যুক্তরাজ্যে শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের সব ধরনের সম্পর্ক তৈরি নিষিদ্ধ