5.9 C
London
November 22, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

লন্ডনে বেক্সিমকোর ‘দুই যুবরাজের’ ৮৪৬ কোটি টাকার ফ্ল্যাট-বাড়ি

বাংলাদেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান ও তার ভাই সোহেল রহমানের ছেলে যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরের সবচাইতে অভিজাত এলাকায় ৮৪৬ কোটি টাকায় ৬টি ফ্ল্যাট কিনেছেন। সবচাইতে মূল্যবান ফ্ল্যাটের দাম ২৬ দশমিক ৭ মিলিয়ন পাউন্ড বা ৪১৬ কোটি টাকা, সর্বনিম্নটির মূল্য ১ দশমিক ২ মিলিয়ন পাউন্ড বা ১৯ কোটি টাকা। সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমান—দুজনই ব্রিটিশ নাগরিক।

আজ মঙ্গলবার ৬ সেপ্টেম্বর বাংলা আউটলুকে প্রকাশিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে জানা যায়, বাকিংহাম প্যালেসের খুব কাছের সবচেয়ে দামি এলাকার একটি হলো লন্ডনের এক গ্রোসভেনর স্কয়ার এলাকা। এই এক গ্রোসভেনরে স্কয়ারেই বিশ্বের অতি ধনীদের অতি বিলাসবহুল একটি আবাসিক ভবন অবস্থিত।

২০২২ সালের ৭ মার্চ এই ঐতিহাসিক আবাসিক ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি অ্যাপার্টমেন্ট ৪১৬ কোটি ২২ লাখ ৭০ হাজার টাকায় (২৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন ব্রিটিশ পাউন্ড) বিক্রি হয়। এই ভবনটিতে ২৪ ঘণ্টা পাঁচ তারকা হোটেলের সুযোগ-সুবিধা এবং দূতাবাসস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে।

আর এর ক্রেতা হলেন ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসে নিবন্ধিত ওয়ান গ্রোসভেনর স্কয়ার নামের একটি কোম্পানি। যার সুবিধাভোগী হলেন সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান। সবচেয়ে বড় কথা, এই অ্যাপার্টমেন্টই লন্ডনে শায়ানের একমাত্র স্থাবর সম্পত্তি নয়। লন্ডনে তার আরও সম্পত্তি আছে।

এই এক গ্রোসভেনর স্কয়ার থেকে মাত্র ৩৫০ মিটারেরও কম দূরত্বে ১৭ গ্রোসভেনর স্কয়ারে ১৭শ শতকের আরও একটি ঐতিহাসিক বাড়ি আছে। যেটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে রূপান্তর করা হয়েছে।

২০১০ সালের ২৫ জুন এই ঐতিহাসিক ভবনের ষষ্ঠ তলার একটি অ্যাপার্টমেন্ট ৭২ কোটি ১৩ লাখ ৪৩ হাজারের বেশি টাকায় (৬ দশমিক ৫৫ মিলিয়ন পাউন্ডে) ক্রিকলউড বেঞ্চার নামের একটি কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হয়। এই ক্রিকলউড বেঞ্চারও ওই আইল্যান্ডের বাসিন্দার নামে নিবন্ধিত কোম্পানি। যার সুবিধাভোগী ৪২ বছর বয়সী শায়ান।

ক্রিকলউড ভেঞ্চার নিবন্ধনে যে ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে সেই একই ঠিকানা তিনটি ট্রাস্টে ব্যবহৃত হয়েছিল, যাদের নাম প্যান্ডোরা পেপার্সে (অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ বিদেশে নিয়ে লুকানোর এবং কর ফাঁকির গোপন জগত নিয়ে অনুসন্ধানী এক রিপোর্ট) এসেছিল।

লন্ডনে শায়ানের আরও একটি বাড়ি আছে। আর সেটি লন্ডনের গোল্ডার্স গ্রিনের অভিজাত পাড়ায় অবস্থিত একটি সেমি-ডিটাচড বাড়ি। এই বাড়িটি ২০১১ সালের ২৮ জানুয়ারি ১৮ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার টাকায় (১.২ মিলিয়ন পাউন্ড) কেনা হয়। আর বাড়িটির মালিকানায় রয়েছে লেডিবার্ড প্রোপার্টি। ক্রিকলউড ভেঞ্চার ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপের যে ব্যক্তির ঠিকানায় নিবন্ধিত, সেই একই ঠিকানায় এই লেডিবার্ড প্রোপার্টিও নিবন্ধিত। আর এর সুবিধাভোগীও শায়ান। এই বাড়িটিতেই বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোটবোন শেখ রেহানা বিনা ভাড়ায় থাকেন বলে ২০২২ সালের শুরুর দিকে সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রেকর্ড থেকে দেখা যায়, বেক্সিমকোর সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের শ্রীলঙ্কায় কারখানা স্থাপনের জন্য ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাঠানোর অনুমতিপত্র আছে। বিদেশে সম্পদ কিনতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে শায়ান এবং শাহরিয়ার কোনো অনুমতি নেননি। তার মানে হলো সেসব অর্থ বাংলাদেশ থেকে পাচার করা হয়েছিল। কারণ যুক্তরাজ্যে তারা এমন কোনো চাকুরিতে যুক্ত ছিলেন না যেখান থেকে এতো বিপুল পরিমাণ অর্থ আসবে। তাই ওইসব সম্পদ কেনার অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

২০২২-২৩ অর্থ বছরের কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদনে বেক্সিমকো লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে শাহরিয়ারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ ছাড়াও তিনি বেক্সিমকোর বিস্তৃত টেক্সটাইল বিভাগের সমন্বিত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।

প্রতিবেদনে বলা, জুনের শেষে বেক্সিমকো গ্রুপের কাছে জনতার দেওয়া মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার কোটি টাকা। যা ঋণদাতার পরিশোধিত মূলধনের প্রায় ৯৫০ শতাংশ—এবং যা খুব সহজভাবেই ব্যাংকটির একক-ঋণগ্রহিতার ঋণসীমা অতিক্রম করে।

বাংলা আউটলুকের পক্ষ থেকে শায়ান ও শাহরিয়ারের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল। তবে তারা কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

সূত্রঃ বাংলা আউটলুক

এম.কে
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আরো পড়ুন

নোয়াখালীর সেই নারীকে তুলে নিয়ে যাওয়া সাম্প্রদায়িক ঘটনা নয় ছিল পারিবারিক কলহ

আয়নাঘর’ নিয়ন্ত্রণ করতেন তারিক আহমেদ সিদ্দিক

সেনাবাহিনীতে বড় রদবদল, চাকরিচ্যুত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান