6.3 C
London
December 23, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

লন্ডন শহর থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে পরিবার, গৃহহীন হয়ে পড়ছে মানুষ

লন্ডনের কাউন্সিলগুলি শত শত গৃহহীন পরিবারকে লন্ডন থেকে ২৪ ঘন্টা আলটিমেটাম দিয়ে সরিয়ে দিতে চায় বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে জানা যায়।
লন্ডনের ক্যাম্পেইন গ্রুপ বলেছে যে ৩১৯টি পরিবারকে ২০২৩ সালে লন্ডন হতে বের হয়ে যাওয়ার নোটিশ প্রদান করা হয়। যার ফলে অনেক পরিবার নানা ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির শিকার হবার মুখে পতিত হয়েছে। গত বছরে এই রকম পরিস্থিতির মুখে পড়েছে লন্ডনের শত শত পরিবার বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়। কিছু পরিবারকে মাত্র ২৪ ঘন্টার নোটিশ দেয়া হয়েছিল লন্ডনের বাইরে যাওয়ার জন্য। কিছু পরিবারকে সাময়িকভাবে বাস করা আবাসন হতে রাস্তায় ঠেলে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
ক্যাম্পেইন গ্রুপ হাউজিং অ্যাকশন সাউথওয়ার্ক এবং ল্যাম্বেথ (এইচএএসএল) এই সকল পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছে। তাদের দাবি কাউন্সিল ২৪ ঘন্টার সময় দিয়ে জনসাধারণকে ইচ্ছাকৃতভাবে গৃহহীন করছে।
কাউন্সিলের দেয়া অফার গ্রহণ করা ১০টি পরিবারের মধ্যে একটি পরিবারকে উত্তর-পূর্বে হার্টলপুল এবং ডরহামে পাঠানো হয় বলে জানা যায়। কিছু পরিবারকে মিডল্যান্ডসে প্রেরণ করা হয়। লন্ডনের বাইরে আবাসস্থল বিবেচনায় মিডল্যান্ডস সবচেয়ে জনপ্রিয় যেখানে সর্বোচ্চ সংখ্যক পরিবারকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।
জুপলার মতে, যুক্তরাজ্যের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চল বসবাসের জন্য সস্তা অঞ্চল। বেসরকারীভাবে ভাড়াটিয়ারা ২০২৪ সালে ৬৯৫ পাউন্ড মাসিক বাড়িভাড়া প্রদান করে থাকেন। হার্টলপুলে চার বেডরুমের বাড়িভাড়া ৬৮৮ পাউন্ড প্রতি মাসে বলে তথ্যানুযায়ী জানা যায় এবং ডারহামে চার বেডরুমের বাড়িভাড়া ৬০০ পাউন্ড।
উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলের চেয়ে লন্ডনের বাড়ি ভাড়া প্রায় ৪ গুণ বেশি। লন্ডন শহরের হ্যাকনি, টাওয়ার হ্যামলেটস এবং ক্যামডেনের মতো অঞ্চলে গড় মাসিক ভাড়া ২,১২১ পাউন্ড। যেসব পরিবারকে লন্ডন থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে তাদের রাজধানীতে ফিরে আসার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ। কারণ বাড়িভাড়ার এই তারতম্যের কারণে তারা আর লন্ডন শহরে ফেরার সুযোগ থাকে না।
হাসলের মুখপাত্র এলিজাবেথ ওয়াইট বলেছেন, “আমাদের সর্বশেষ গবেষণায় রেকর্ড-ব্রেকিং গৃহহীন লোকেদের পরিসংখ্যান যুক্ত হয়েছে। কাউন্সিলগুলি বিপুল সংখ্যক পরিবারকে ইংল্যান্ডের উত্তর-পূর্বে ঠেলে দিচ্ছে অনেক সময় হুমকির মুখে পরিবারকে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। কাউন্সিলের এই আচরণ অবশ্যই বেআইনী, তবে আইনী সহায়তা পায় না বলে মানুষেরা অসহায়ভাবে কাউন্সিলের কথা মেনে নিচ্ছে।”
এনফিল্ডের একটি পরিবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, তার পরিবারকে স্টোক-অন-ট্রেন্ট হতে দেড় মাইল দূরে একটি বাড়িতে স্থানান্তরের প্রস্তাব দেয় কাউন্সিল।
তিনি বলেন, কাউন্সিল আমাকে এবং আমার বাচ্চাদের রাস্তায় গৃহহীন অবস্থায় ছেড়ে দিয়েছিল। তিন সপ্তাহ গৃহহীন থাকার পর তারা অবশেষে আমাদের একটি হোটেলে রাখতে রাজি হয়। তারা আমাদের সাত মাস সেখানে রেখেছিল। যেখানে কোনো রান্নাঘর ছিল না এবং বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়ার জন্য আমাদের দেড় ঘন্টা ভ্রমণ করতে হত।
ওয়ালথাম ফরেস্ট কাউন্সিলের একজন মুখপাত্র বলেন, “ আমরা আমাদের কাছে সাহায্যের জন্য আসা  লোকদের সহায়তা করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করি। দুর্ভাগ্যক্রমে কাউন্সিলে পর্যাপ্ত বাড়ি নেই বিধায় আমাদের করণীয় সীমিত।”
উল্লেখ্য যে, রাজধানীর পাঁচটি কাউন্সিলের মধ্যে ওয়ালথাম ফরেস্ট লন্ডনের বাইরে সর্বাধিক পরিবারকে পাঠিয়েছিল। তারা রাজধানীর বাইরে ১৩০ টি পরিবারের মধ্যে ৬৭টি পরিবারকে স্থানান্তর হতে বাধ্য করে। এনফিল্ড,বার্নেট, বার্কিং, ডাগেনহাম ও রেডব্রিজ কাউন্সিলও একই পদ্ধতির জনগণকে গৃহহীন করার পথে নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে জানা যায়।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
১০ জুন ২০২৪

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে আশ্রয় প্রার্থীদের আবাসন সংকট নিয়ে নতুন বিতর্ক

হাউজ অব কমন্সে বিতর্কিত রুয়ান্ডা বিল পাস

নিউজ ডেস্ক

বন্যা পরবর্তী প্লাবনে বিধ্বস্ত যুক্তরাজ্যের কৃষিখাত