তৃতীয় দিনের মতো চলছে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের জনগণের তীব্র বিক্ষোভ। সেনা অভ্যুত্থানে আটক নেত্রী অং সান সু চির মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) মিয়ানমারজুড়ে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছেন। খবর, বিবিসির।
বিবিসি জানায়, মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম শহত মান্দালায় জড়ো হয়েছেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। অন্যদিকে, রাজধানী নেপিদোতে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ।
নেপিদোসহ মিয়ানমারের অন্য শহরগুলোতে শিক্ষক, আইনজীবী, ব্যাংক কর্মকর্তা, সরকারি কর্মচারীসহ সব শ্রেণি-পেশার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ধর্মঘট পালন করছেন। সড়কে নেমে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কাজে ফিরবেন না বলেও জানিয়েছেন এবং অন্য কর্মীদেরও আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।
বার্তাসংস্থা এএফপি জানায়, ২৮ বছর বয়সী এক পোশাক শ্রমিক হনিন থাজিন বলেন, ‘আজ কর্মদিবস, কিন্তু যদি আমাদের বেতন কেটে রাখা হয়, তবু আমরা কাজে যাচ্ছি না। ’
এর আগে রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) মিয়ানমার তার ইতিহাসে যুগের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ দেখেছে। ২০০৭ সালের ‘স্যাফ্রন রেভ্যুলুশন’-এর পর এত বড় বিক্ষোভ মিয়ানমারে আর দেখা যায়নি।
এদিকে জনগণের প্রতিবাদ রুখতে শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দেশজুড়ে ইন্টারনেট সেবা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয় যেন বিক্ষোভকারীরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারেন। তবুও দমন করা যায়নি মিয়ানমারের বিক্ষোভকারীদের।
গত নভেম্বর মাসে নিয়ানমারে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। এ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনী। দেশটির শাসনভার নেন সেনাপ্রধান মিন অং হলাইং। তার পরপরই মিয়ানমারে বছরব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।
এদিকে, মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি উইন মিন্ত, নেত্রী সু চি এবং এনএলডির জেষ্ঠ্য নেতাদের আটক করে গৃহবন্দি করে সামরিক জান্তা।
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১
আন্তর্জাতিক ডেস্ক