প্রাথমিক পর্যায়ে লিভার ক্যানসার রোগ শনাক্ত করা যাবে এমন পরীক্ষা উদ্ভাবনের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশের একদল চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী।
বাংলাদেশের কয়েকজন প্রখ্যাত চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী যৌথভাবে এই পরীক্ষা উদ্ভাবনের ঘোষণা দেন।
বিখ্যাত পিয়ার রিভিউড আন্তর্জাতিক জার্নাল নেচার কমিউনিকেশন্সে এই উদ্ভাবনী পরীক্ষা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ হয়েছে।
চিকিৎসকরা জানান, এই পরীক্ষার মাধ্যমে ঝুঁকিতে আছে এমন ব্যক্তিদের এইচসিসি শনাক্তকরণে বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। যাতে ক্যানসারের কারণে অসুস্থতা ও মৃত্যুর হার অনেকাংশে কমে আসবে।
বিজ্ঞানীদের মতে, এইচসিসি’র ব্যাপকতা বিশ্বের সব দেশেই দেখা যায় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই রোগ দেরিতে শনাক্ত হয়। ফলে চিকিৎসা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় যা রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। উদ্ভাবিত এই পরীক্ষা আধুনিক সিকুয়েন্সিং ও মাল্টিপ্লেক্সিং প্রক্রিয়া ব্যবহার করে সাধারণ টিস্যু, রক্তের অন্যান্য নমুনা ও নন-এইচসিসি টিউমার থেকে এইচসিসি নমুনাকে আলাদা করে প্রচলিত রোগ নির্ণয় পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা দূর করতে পারে।
গবেষণার তথ্যে এসেছে, ৫৫৪ জন ব্যক্তিকে গবেষণার আওতায় এনে এই পরীক্ষার মূল্যায়ন করেছেন গবেষকরা। এর মধ্যে ছিলেন এইচসিসি রোগী, নন-এইচসিসি ক্যানসার রোগী, ক্রনিক হেপাটাইটিস বি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি ও সুস্থ ব্যক্তি। ফলাফল হিসেবে এইচসিসি শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে ৮৪ দশমিক ৫ শতাংশ সেন্সিটিভিটি ও ৯৫ শতাংশ স্পেসিফিসিটি দেখা গেছে পরীক্ষাতে। গবেষণা ফলাফলে এইচসিসি রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
প্রখ্যাত বাংলাদেশি হেপাটোলজিস্ট, চিকিৎসা বিজ্ঞানী, লেখক ও কলামিস্ট এবং এই প্রকল্পের প্রধান গবেষক অধ্যাপক ডা মামুন আল মাহতাব বলেন, যদিও এ বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়ের একটি মানসম্মত কৌশলের ভূমিকা পালন করে।
জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে এই উদ্ভাবনের সম্ভাবনা অসাধারণ। এর মাধ্যমে ক্যানসার নির্ণয়সহ বাংলাদেশের মানুষের জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে আমাদের দলের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটেছে। এইচসিসি-র ব্যাপকতা কমাতে এবং দেশের মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নতির লক্ষ্যে আমরা বাংলাদেশে এই পরীক্ষা শুরু করার পরিকল্পনা করছি।
এম.কে
১০ জুন ২০২৩