মার্কিন সরকার বন্ধ (শাটডাউন) হয়ে যাওয়ায় নাসার প্রায় ১৫ হাজার কর্মীকে সাময়িকভাবে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এতে সংস্থার বহু প্রকল্প স্থগিত হয়ে গেলেও চাঁদে ফেরার মহাকাশ কর্মসূচি আর্তেমিস প্রোগ্রাম পূর্ণ গতিতেই এগিয়ে যাচ্ছে। নাসার নেতৃত্ব ও কংগ্রেসের রিপাবলিকান-ডেমোক্র্যাট উভয় শিবিরই একে জাতীয় নিরাপত্তার অগ্রাধিকার বলে ঘোষণা করেছে।
নাসার তথ্য অনুযায়ী, শাটডাউনের মাঝেও ৩ হাজারের বেশি কর্মী আর্তেমিস প্রকল্পে কাজ চালিয়ে যাবেন। এর মধ্যে রয়েছে আর্তেমিস–২, যেখানে আগামী ফেব্রুয়ারিতে চারজন মহাকাশচারীকে নিয়ে চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার টেস্ট ফ্লাইটের প্রস্তুতি চলছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে আর্তেমিস–৩ (২০২৭ সালে চাঁদে অবতরণের মিশন) ও পরবর্তী প্রকল্পগুলোকেও ছাড় দেওয়া হয়েছে।
তবে বাজেট নিয়ে অনিশ্চয়তা নাসাকে চাপে ফেলেছে। প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলারের আর্তেমিস প্রকল্প ইতোমধ্যেই সময়সূচির পেছনে এবং খরচের বাইরে চলে গেছে। বিশেষ করে স্পেসএক্সের স্টারশিপ রকেট বারবার পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে। আগস্টে একটি সফল টেস্ট হলেও অক্টোবরে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা বাকি রয়েছে।
হোয়াইট হাউস নাসার বিজ্ঞান তহবিল অর্ধেক কমানো এবং মোট বাজেট ২৪% কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে। সমালোচকরা সতর্ক করে বলেছেন, এতে বহু বিলিয়ন ডলারের বিজ্ঞান মিশন আগেভাগেই বন্ধ হয়ে যাবে এবং যুক্তরাষ্ট্র বৈজ্ঞানিক নেতৃত্ব হারাবে। সাবেক প্রশাসক জিম ব্রিডেনস্টাইন কংগ্রেসে বলেন, “প্রাথমিক গবেষণা ছাড়া আমরা জিপিএসসহ বহু প্রযুক্তিতে পৌঁছাতে পারতাম না।”
এ অবস্থায় কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় দলের আটজন সদস্য নাসাকে সুরক্ষার দাবি জানিয়ে হাউস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস কমিটিতে চিঠি দিয়েছেন। তারা সতর্ক করেছেন, নাসার বৈজ্ঞানিক প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেলে ২০টি রোবোটিক মিশনে ইতিমধ্যেই বিনিয়োগ করা ১২ বিলিয়ন ডলার অপচয় হবে।
নাসার ভেতরে অনিশ্চয়তা ও বিশৃঙ্খলা বাড়ছে। ইতোমধ্যেই সংস্থার প্রায় ২০% কর্মী চাকরি ছেড়েছেন, যার মধ্যে অনেক শীর্ষ বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। একজন প্রকৌশলী সিএনএনকে বলেন, “ভবন বন্ধ, ইউনিয়ন ভাঙার চেষ্টা আর চাকরি ছাড়ার প্রবণতা—সব মিলিয়ে নাসায় কাজ করা এখন প্রায় অসম্ভব।”
সূত্রঃ সিএনএন
এম.কে
০৪ অক্টোবর ২০২৫