রাজধানীর ব্যস্ততম একটি মোড়ে গত বুধবার দুপুরে ছাত্রদের দাবিতে হঠাৎ করে সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটে। দাবিদাওয়া আদায়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তার মাঝখানে বসে পড়ে, ব্যানার-প্ল্যাকার্ড হাতে নিতে শুরু করে স্লোগান। এই আকস্মিক ব্যারিকেডের ফলে সাধারণ যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে, আটকে পড়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ গাড়ি। এই আটকে থাকা গাড়ির সারিতে ছিলেন চিতাহ রেজিমেন্টের একজন চৌকস ও দুর্ধর্ষ প্যারা কমান্ডো অফিসার—লেফটেন্যান্ট কর্নেল খলিল।
এয়ারবর্ন ইনসিগনিয়া পদকপ্রাপ্ত এই সেনা কর্মকর্তা তার সামরিক জীবনে বহু কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। যুদ্ধের মাঠের পরিস্থিতি ও বুধবার রাস্তা আটকে রাখা প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি পরিস্থিতি ছিল একেবারে ভিন্ন। সামনে কোনো অস্ত্রধারী শত্রু নয়, বরং ছিলো দেশেরই কিছু ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী। তবু পরিস্থিতির জটিলতা কোনো অংশে কম ছিল না। মুহূর্তের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হয়—জোরপ্রয়োগে পরিস্থিতি দমন করা হবে, না কি সংলাপ ও শান্ত আচরণের মাধ্যমে সমাধানের পথ খোঁজা হবে?
লেফটেন্যান্ট কর্নেল খলিল বেছে নেন দ্বিতীয় পথটি। তিনি শান্তভাবে গাড়ি থেকে নেমে এসে শিক্ষার্থীদের মাঝে যান, কাউকে হুমকি না দিয়ে, কাউকে তুচ্ছ না করে নিজের ঠান্ডা মাথার নেতৃত্বে কথা বলেন। শিক্ষার্থীদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং বুঝতে চেষ্টা করেন তাদের দাবিগুলো। তার পরিপূর্ণ আত্মবিশ্বাস, পরিমিত ভাষা ও শৃঙ্খলার প্রতি তার শ্রদ্ধাশীল দৃষ্টিভঙ্গি শিক্ষার্থীদের মন ছুঁয়ে যায়।
সেনাবাহিনী সূত্র হতে জানা যায়, লেফটেন্যান্ট কর্নেল খলিল একজন ‘লিড বাই এক্সাম্পল’ টাইপ অফিসার। তার শান্ত কিন্তু প্রভাবশালী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ধরণ সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে প্রশংসিত হয়েছে বহুবার। বুধবারের ঘটনাও তার ব্যতিক্রম নয়। তিনি আবার প্রমাণ করলেন, সেনাবাহিনীর আসল শক্তি শুধু অস্ত্র নয়, বরং জনগণের হৃদয় জয় করাও।
সামাজিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের মানবিক নেতৃত্বই আজকের বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়—যেখানে সামরিক শক্তি নয়, বিবেক ও বিচক্ষণতাই আসল অস্ত্র। লেফটেন্যান্ট কর্নেল খলিল সেই আদর্শিক সেনা অফিসারদের প্রতিনিধি, যাদের জন্য সাধারণ মানুষ সেনাবাহিনীর ওপর আস্থা রাখে।
সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া
এম.কে
২৪ এপ্রিল ২০২৫