টিনেজার বা তারও কম বয়সীরা পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এর থেকে টিনেজার বা শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে ব্রিটেনে অফকম নতুন একটি গাইডলাইন এনেছে। তাতে বলা হয়েছে, ইন্টারনেটে কোনো ব্যবহারকারী পর্নোগ্রাফির সাইটে ঢুকতে হলে বয়স ১৮ বছরের উপরে তা প্রমাণ করতে তাকে নিজের আইডি আপলোড করতে হবে। এখানেই শেষ না, তার ব্যাংক সম্পর্কে বা মোবাইল সেবা দানকারী সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে। যে ছবি আপলোড করা হবে তা ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বয়স নির্ধারণের প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।
ইন্টারনেটে নজরদারিকারী সংস্থা অফকম সোমবার এই গাইডলাইন প্রকাশ করেছে। অনলাইন সেফটি অ্যাক্ট বা অনলাইন নিরাপত্তা আইনের অধীনে যৌনতা বিষয়ক কন্টেন্ট থেকে যুব সমাজকে সুরক্ষিত রাখতে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ওয়েবসাইট কিভাবে কাজ করবে তার দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে এতে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ।
এতে আরও বলা হয়, শিশুদের মধ্যে যারা প্রথম অবাধ যৌনাচার দেখে অনলাইনে তাদের গড় বয়স মাত্র ১৩ বছর। অফকম বলেছে, তারা এসব কম বয়সীদের এক্ষেত্রে সাইটগুলো ব্যবহার বন্ধ করতে চায়।
বর্তমানে এক্ষেত্রে শুধু বয়সসীমা ১৮ বছরের ওপরে কিনা তা জানতে চাওয়া হয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে, তাতে সম্মতি দিয়ে যে কেউ ঢুকে যেতে পারে ওয়েবসাইটে। অথবা শুধু ঘোষণা বা সতর্কতা দেয়া হয় ওই সাইটের উপাদানগুলো যৌনতা সম্পর্কিত। এক জরিপে দেখা গেছে, এক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার পক্ষে ব্রিটেনের বেশির ভাগ মানুষ। তবে জরিপে অংশ নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অর্ধেকই তাদের ব্যক্তিগত পরিচয় ও তথ্য ওয়েবসাইটের সঙ্গে শেয়ার করা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
এক্ষেত্রে অফকম বলেছে, ব্রিটেনের প্রাইভেসি আইনের অধীনে সব বয়সীদের নিশ্চয়তা বিষয়ক মেথড ব্যবহার করা হয়। তা তদারক করে ইনফরমেশন কমিশনারের অফিস। ২০২৫ সাল নাগাদ প্রাপ্তবয়স্কদের ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ কিভাবে পর্নোগ্রাফি থেকে শিশুদের সুরক্ষিত রাখছে সে বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে হবে। তা রেকর্ড হয়ে থাকবে। যদি তা না করা হয় তাহলে তারা বিশ্বজুড়ে যে আয় করবে তার শতকরা ১০ ভাগ জরিমানা করা হবে। নিয়ন্ত্রকরা বলছেন, তারা আশা করেন পর্নোগ্রাফিক সাইটগুলো তাদের সঙ্গে কাজ করবে।
অফকমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেম মেলানি ডাউয়িস বলেন, অনলাইনে এখন শিশুদের জন্য পর্নোগ্রাফি হাতের নাগালে। নতুন অনলাইন নিরাপত্তা আইনে এটা পরিষ্কার যে, এই ধারা পরিবর্তন হতে হবে। আমরা যেসব ব্যবস্থা নিচ্ছি তা উচ্চ মাত্রায় কার্যকর। গত বছর অপকর্মের গবেষণায় দেখা যায়, অনলাইন পর্নোগ্রাফি থেকে সুরক্ষিত থাকার ক্ষেত্রে নারীদের মধ্যে শতকরা ৮৭ ভাগ এবং পুরুষদের মধ্যে শতকরা ৭৭ ভাগ সমর্থন করেন। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক যেসব ব্যক্তি আগেই পর্নোছবি দেখেছেন অনলাইনে তারা তাদের ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্সের এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, বয়স যাচাইয়ের এই ব্যবস্থা ব্যবহারকারীর গোপনীয়তার জন্য হুমকি।
এম.কে
০৫ ডিসেম্বর ২০২৩