পাহাড়ে শীতের রোমাঞ্চকর পরিস্থিতি ও থার্টিফার্স্ট নাইটকে ঘিরে খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের ব্যাপক সমাগম ঘটেছে। পঞ্চমী শীতের কুয়াশা ভেদ করে ভোরের আলো ফোটার আগেই দেশের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে পরিবহনে করে খাগড়াছড়িতে আসছে পর্যটকরা। তাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে শহর ও জেলার বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র।
প্রধান পর্যটন কেন্দ্র আলুটিলা ছাড়াও জেলা পরিষদ পার্কসহ বিভিন্ন স্পট এখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠছে। পর্যটকরা মুগ্ধ হচ্ছেন ঢেউ খেলানি পাহাড় ও ঘনকুয়াশাছন্ন প্রকৃতি দেখে। এছাড়া পর্যটকদের জন্য বাড়তি আনন্দ যোগ হয়েছে স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটক ও স্থানীয়রা ঘুরে বেড়াচ্ছেন জেলা পরিষদ পার্ক, আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র, রিছাং ঝর্ণা ও মায়াবিনী লেকসহ সবকটি বিনোদন কেন্দ্র।
রাঙ্গামাটির সাজেক যেতে হলে খাগড়াছড়ি হয়ে যেতে হয়, তাই যারা রাঙ্গামাটির সাজেকে ঘুরতে যান, তারা খাগড়াছড়ির পর্যটন স্পটগুলোর সৌন্দর্যও উপভোগ করে যান।
বিশেষ করে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র থেকে উপভোগ করা খাগড়াছড়ি শহরের মনোরম দৃশ্য আর আঁকাবাঁকাভাবে বয়ে যাওয়া চেঙ্গী নদী, যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের ব্যবস্থাপক উত্তম কুমার মজুমদার জানান, গত এক সপ্তাহ থেকে ও থার্টিফার্স্ট নাইটকে ঘিরে পর্যটকদের ব্যাপক সমাগম ঘটেছে। যা গত ৬ মাস দেশের ও স্থানীয় রাজনৈতিক সংকট কাটিয়ে রেকর্ড পরিমাণ পর্যটকদের আগমন ঘটছে। এর সংখ্যা বাড়ায় ব্যবসাও ভালো হচ্ছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট খাতে। তাছাড়া এবারে বাড়তি চাপ সামলাতেও সতর্ক রয়েছে পর্যটন কর্পোরেশন।
এদিকে পর্যটক সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, খাগড়াছড়িতে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ায় খুশি পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। অনেকে বলেছেন, পর্যটক আসতে তাদের বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। পর্যটনকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্তরা বলেছেন, ছুটি ছাড়াও অনেক পর্যটক আসছেন। এতে তাদের রেভিনিউও বাড়ছে। তারা আশা করছেন জানুয়ারি পুরো মাসটা পর্যটকদের ভিড় থাকবে খাগড়াছড়ির পর্যটন স্পটগুলো।
খাগড়াছড়িতে ঘুরতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয় মাথায় রেখে টুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশের প্রস্তুতির কথা বলছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের উপপরিদর্শক মো. আযুব।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, পর্যটকদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতে কাজ করছে প্রশাসন। নিরাপত্তার পাশাপাশি পর্যটকদের যে কোনো সমস্যায় প্রশাসনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া তিনি জানান, খাগড়াছড়ির আলুটিলা ও জেলা পরিষদ পার্কসহ সবকটি পর্যটককেন্দ্রে প্রতিদিন ৫ থেকে ৮ হাজারের মতো পর্যটকের সমাগম হওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
এম.কে
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪