দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরে পুনরায় সরকারি চাকুরিতে ফিরতে যাচ্ছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ও খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, এ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন হয়েছে এবং দু-এক দিনের মধ্যেই চাকুরিতে পুনর্বহালের আদেশ জারি হতে পারে।
২০০৮ সালে শিক্ষা ছুটি নিয়ে স্বামী তারেক রহমানের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান ডা. জোবাইদা। এরপর ছুটির মেয়াদ শেষ হলেও দেশে ফিরে কর্মস্থলে যোগ না দেওয়ায় ২০১৩ সালে সরকারি চাকুরি হতে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
তবে বদলে যাওয়া রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ২০২৫ সালের মে মাসে তিনি দেশে ফিরে আসেন। সূত্র বলছে, তিনি বর্তমানে তার বাবার ধানমন্ডির ‘মাহবুব ভবনে’ অবস্থান করছেন এবং সেখানে সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
ডা. জোবাইদা রহমান ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করে ১৯৯৫ সালে বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে সরকারি চাকুরিতে যোগ দেন। এরপর লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে মেডিসিনে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার কর্মজীবন বন্ধ হয়ে যায় ২০০৮ সালে যুক্তরাজ্যে চলে যাওয়ার পর।
ছুটি শেষ হওয়ার পরও দেশে ফিরে না আসায় এবং সময়মতো যথাযথ ঠিকানা ও ছুটির কারণ উল্লেখ না করায় তার ছুটি নবায়ন করা হয়নি। মন্ত্রণালয় দুই দফায় তার ‘অসাধারণ ছুটির’ আবেদন প্রত্যাখ্যান করলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তর তা দেরিতে নথিভুক্ত করে, যার বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আইন অনুযায়ী সরকারি চাকুরিতে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের ছুটি মঞ্জুরযোগ্য। এই সময়ের বেশি অনুপস্থিত থাকলে চাকুরির অবসান ঘটে। সেই নিয়মেই তার চাকুরি ২০১৩ সালে বাতিল হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তারেক রহমান, ডা. জোবাইদা রহমান এবং তার মা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় আদালত ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা প্রদান করে। তবে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর, আদালত তার সাজা স্থগিত করে।
বর্তমানে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ডা. জোবাইদা রহমানকে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব এ কে এম ফজলুল হক জানান, “সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। দ্রুতই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।”
এম.কে
০৮ মে ২০২৫