ইরাকের নাসিরিয়াহ থেকে পালিয়ে আসা ২৩ বছর বয়সী দেরে এখন বার্নলির এক ভিক্টোরিয়ান বাড়িতে তিনজন অভিবাসীর সঙ্গে বসবাস করেন। এক সময় তুলা শিল্পের জন্য খ্যাত এই শহর এখন অভিবাসীদের অন্যতম প্রধান আশ্রয়স্থল। বার্নলি, এক্রিংটন ও ব্ল্যাকবার্ন—এই তিন শহরে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা মাথাপিছু হিসেবে দেশের শীর্ষে।
সরকার ঘোষণা দিয়েছে, ২০২৯ সালের মধ্যে হোটেল ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করা হবে। পরিবর্তে আশ্রয়প্রার্থীদের রাখা হবে শেয়ার করা আবাসনে। এর অংশ হিসেবে দেরে প্রথমে হিথ্রো ও ক্নাটসফোর্ডের হোটেলে থাকলেও বর্তমানে বার্নলির একটি £১,৩১,০০০ মূল্যের বাড়িতে আছেন। দুই বছর ধরে আশ্রয়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন তিনি। কাজ করার অনুমতি থাকলেও ই-ভিসা না থাকায় চাকরি পাচ্ছেন না।
বার্নলির রাস্তায় সেন্ট জর্জ ও ইউনিয়ন পতাকা ওড়ানো হয়েছে অপারেশন রেইজ দ্য কালারসসের উদ্যোগে। কেউ একে দেশপ্রেমের নিদর্শন বললেও অনেকে মনে করেন এটি অভিবাসীদের ভীত করার প্রচেষ্টা। দেরে জানান, কয়েক মাস আগে তিনি টাউন সেন্টারে তিনজন ব্যক্তি কর্তৃক হামলার শিকার হয়েছেন।
পাদিহামের পাঁচ শয্যার একটি বাড়িতে ইরিত্রিয়ার অভিয়েল থাকেন সুদান ও আফগানিস্তানের আরও দুই অভিবাসীর সঙ্গে। অভিয়েল জানিয়েছেন, সরকারবিরোধী অবস্থানের কারণে জীবন বাঁচাতে তিনি নৌকায় করে চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন। স্থানীয়রা বলছেন, সাম্প্রতিক অভিবাসন জনসংখ্যার ভারসাম্যে নতুন উত্তেজনা তৈরি করেছে।
বার্নলির গ্যানো এলাকায় একটি পুরোনো মেথডিস্ট চার্চে আগুন লাগার ঘটনাকে অনেকেই ভবনটি অভিবাসীদের জন্য রূপান্তরের আশঙ্কার সঙ্গে যুক্ত করছেন। যদিও কাউন্সিল জানিয়েছে, জায়গাটি শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্ল্যাটে রূপান্তর করা হবে। স্থানীয় মেকানিক নিকোলাস পোর্টার বলেন, “মানুষ বিশ্বাস করছে না। ঘটনাটির পর থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ।”
অন্যদিকে, স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন অভিবাসীদের কারণে বাড়িভাড়া বেড়েছে। হাঙ্গেরি থেকে আসা ইমরা জানান, “আমাদের ভাড়া এক লাফে £৪৮০ থেকে £৭০০ হয়ে গেছে।”
এক্রিংটনের অসওয়াল্ডটুইস্টলে দুটি বাড়িতে আটজন অভিবাসী থাকেন। ইথিওপিয়ার নাহুসেনাই আয়ালেউ জানান, তিনবার ব্যর্থ হয়ে অবশেষে নৌকায় করে ইংল্যান্ডে পৌঁছেছেন। তিনি বর্তমানে সপ্তাহে £৪৯ ভাতা দিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, অভিবাসীদের কারণে এলাকার সামাজিক বন্ধন দুর্বল হচ্ছে।
ব্ল্যাকবার্নে পরিস্থিতি আরও জটিল। জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশেরও বেশি এশিয়ান বংশোদ্ভূত হলেও নতুন আশ্রয়প্রার্থীদের চাপ বাড়ছে। স্থানীয় কাউন্সিলকে হোম অফিস অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে বলেও খবরে জানা যায়।
সূত্রঃ ডেইলি মেইল
এম.কে
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫