10.2 C
London
April 27, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

সরকারের অযাচিত সিদ্ধান্তকে অর্থনৈতিক দূরাবস্থার জন্য দায়ী করলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট

বাংলাদেশ সরকার নগদে যে ভর্তুকি বা প্রণোদনা দিতো তা তুলে দিলেও অন্যভাবে পূরণ করা যায়। কোনো প্রকার বাছ-বিচার না করে হঠাৎ করে প্রণোদনা তুলে দিয়ে প্রতিযোগিতার সীমা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে, যার কারণে সংকট হবেই বলে নিজের মতামত জানান ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বাংলাদেশের বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজেরও ভাইস চেয়ারম্যান।

বাংলাদেশ সরকার পোশাক খাতসহ বিভিন্ন সেক্টর থেকে প্রণোদনা কমানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সে বিষয়ে মতামত জানাতে গিয়ে তিনি সরকার ও দেশের বিভিন্ন অবস্থা তুলে ধরেন।

প্রণোদনা কমানোর সিদ্ধান্ত এ সময়ে অর্থনীতির জন্য বড় ধাক্কা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শুধু গার্মেন্ট শিল্প থেকে নয়, সরকার অনেক কিছু্র উপর থেকেই প্রণোদনা উঠিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকার এমন সময়ে এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে, যখন বৈশ্বিকভাবে আমরা বিশেষ চাপের মধ্যে আছি। তৈরি পোশাকের অর্ডার কমছে। আমেরিকা ও ইউরোপ থেকে দিন দিন রপ্তানি কমছে। কমে আসার নানা কারণ আছে। বিশেষত করোনা মহামারির এখনো প্রভাব রয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্য উত্তেজনা, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, ডলার ক্রাইসিস তো আছেই।’

ডলার সংকট ব্যবসার নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ডলারের যে ক্রাইসিস তা আমাদের এমনিতেই ক্ষতিগ্রস্ত করে তুলছে। এ সময়ে প্রণোদনা কমিয়ে আনা বা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। বিশ্বের অনেক দেশ আছে, যারা মধ্যআয়ের দেশে যাচ্ছে। অথচ তারা এখনো ভর্তুকি তুলে নেয়নি, চালিয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তুলে নিলেও অন্যভাবে ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে। যেমন- জ্বালানির উপর দিচ্ছে, বিদ্যুতের উপর দিচ্ছে। আমরা তো সে প্যাকেজও ঘোষণা করতে পারতাম। আমার তো মনে হয় না, সরকার কোনো ব্যবসায়ী বা সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকার খুব বুঝে শুনে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে হয় না।’

‘সরকার স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যআয়ের দেশে যাচ্ছে ভালো কথা। এ যাত্রায় সবারই অবদান আছে। বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে ভর্তুকি দিয়ে আমাদের উৎপাদন ব্যয় কমানোতে সহযোগিতা করুক। ব্যবসায়ীরা ভালো না থাকলে অর্থনীতি ভালো থাকবে না। সরকার ব্যবসায়ীদের জন্য অন্যভাবে প্যাকেজ ঘোষণা করুক।’

সরকার ডলার সংকটও দূর করতে পারছে না। ডলারের মার্কেট প্রাইস ১২৫ টাকা। আর আমরা রপ্তানিকারকরা পাচ্ছি ১০৯ টাকা। এভাবে চলতে থাকলে আমরা তো প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবো না। ব্যবসা অন্য দেশে চলে যাবে। ভারত-পাকিস্তানে আমাদের বাজার চলে যেতে পারে।’

‘ডলারের প্রাইস যদি সমন্বয় না করা হয়, তাহলে সংকট কোনোভাবেই কাটবে না। রেমিট্যান্স আসছে না একই কারণে। কারণ তারা বাইরে ভালো রেট পাচ্ছে। কম রেটে বাংলাদেশে তারা ডলার পাঠাবে কেন? সরকার সাহস করে ডলার প্রাইসকে মার্কেট প্রাইসের সঙ্গে সমন্বয় করুক। হয়তো সাময়িক একটু সমস্যা হতে পারে। কিন্তু এক সময় এসে ঠিক হয়ে যাবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের দায় প্রসঙ্গে বলেন, ‘সমস্যাটা কোথায় বাংলাদেশ ব্যাংক জানার কথা। ডলার প্রাইস ওপেন করা দরকার। কারণ এ সংকট থাকলে ডলার তো আসবে না। এর কারণ বের করুক। ব্যাংক ডলার পাচ্ছে না। হুন্ডি ব্যবসায়ীরা কিন্তু ঠিকই পাচ্ছে।’

ডলার প্রাইস কেন সমন্বয় নেই তার দায় বাংলাদেশ ব্যাংকের। কেন কালোবাজারে যাচ্ছে? ব্যাংকগুলো ডলার ভিন্ন ভিন্ন রেটে কীভাবে বিক্রি করে তার ব্যবস্থা নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সংকটের কারণে তো অন্যরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না। প্রণোদনা তুলে দিচ্ছেন, আবার ডলারে মার খাচ্ছি। এভাবে তো ব্যবসা করা যাবে না।’

সূত্রঃ জাগো নিউজ

এম.কে
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আরো পড়ুন

বাংলাদেশ থেকে নেয়া ঋণ পুরোটাই শোধ করল শ্রীলংকা

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়লেন বাংলাদেশি তোরসা

দিনাজপুরের লিচু যাচ্ছে ফ্রান্স