9 C
London
January 27, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

সরকারের ব্যাংকিত খাতে জালিয়াতি দমনের পরিকল্পনা নিয়ে নতুন ঝুঁকি

যুক্তরাজ্যের ব্যাংকিং খাত সরকারের বেনিফিট জালিয়াতি রোধে যে ভোক্তা সুরক্ষা বিধি করতে যাচ্ছে তাতে মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে।

বুধবার প্রকাশিত নতুন একটি আইন প্রনয়ণ হতে যাচ্ছে যার মাধ্যমে ডিপার্টমেন্ট ফর ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশন্স (DWP) আদালতের আদেশ ছাড়াই যে কারো অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ পুনরুদ্ধার করার অনুমতি দেবে।

লেবার সরকারের একজন মন্ত্রী বলেন, এটি ঋণ পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া দ্রুততর করবে এবং জালিয়াতি দমনের বৃহত্তর উদ্যোগে সহায়ক হবে।

কিন্তু যুক্তরাজ্যের ব্যাংকগুলোকে প্রতিনিধিত্বকারী বৃহত্তম ব্যবসায়িক গোষ্ঠী UK Finance জানিয়েছে, এই পরিকল্পনা দুর্বল অ্যাকাউন্টধারীদের সুরক্ষার জন্য ব্যাংকগুলোর প্রচেষ্টাকে বাঁধাগ্রস্ত করতে পারে।

খবরে জানা যায় গত বুধবারের এই নতুন আইনের ঘোষণা DWP কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার ফল। যেটি ব্যাংকগুলোকে বেনিফিট জালিয়াতি দমনে আরও সক্রিয়ভাবে অন্তর্ভুক্ত করার উপর ভিত্তি করে সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। গত জুলাইয়ের সাধারণ নির্বাচনের আগে প্রাক্তন কনজারভেটিভ সরকারের অনুরূপ পরিকল্পনাগুলো সংসদে অনুমোদন পায়নি।

ব্যাংকিং খাতের নেতারা গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে নীরবে এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে লবিং করে আসছেন। কিন্তু এবারই প্রথম তারা জনসমক্ষে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন। যা মন্ত্রীদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে, যারা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর লক্ষ্যে ব্যাংকিং খাতকে তাদের পাশে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বর্তমানে, DWP প্রাপকদের বর্তমান দাবির ভিত্তিতে বা PAYE পদ্ধতির মাধ্যমে ঋণ পুনরুদ্ধার করতে পারে।

কিন্তু সরকার দাবি করছে, সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ পুনরুদ্ধারের ক্ষমতা পাওয়ায় তারা এমন প্রাপকদের কাছ থেকে অর্থ পুনরুদ্ধার করতে পারবে যারা আর সুবিধা পাচ্ছেন না। এটি আদালত ব্যবস্থার উপর চাপ কমাতে সহায়ক হবে।

নতুন আইনের অধীনে, DWP সরাসরি “ডিরেক্ট ডিডাকশন অর্ডার”-এর মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে ঋণের অর্থ স্থানান্তর করতে বাধ্য করতে পারবে। ব্যাংকগুলো তাদের প্রশাসনিক ব্যয় মেটানোর জন্য প্রাপক থেকে একটি ফি নিতে পারবে।

তবে, এক্ষেত্রে প্রথমে DWP-কে প্রাপকের তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট পর্যালোচনা করতে হবে এবং দেখতে হবে যে এই অর্থ কেটে নেওয়া প্রাপকের নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচে অসুবিধা সৃষ্টি করবে কিনা।

UK Finance-এর অর্থনৈতিক অপরাধ এবং নীতি কৌশল বিভাগের পরিচালক ড্যানিয়েল চিচোকি বলেছেন, এই পরিকল্পনাগুলো দুর্বল গ্রাহকদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করবে কিনা এবং বিদ্যমান নিয়ন্ত্রক ও আইনি বাধ্যবাধকতার সাথে সংঘর্ষে আসবে কিনা তা পরীক্ষা করা প্রয়োজন।

তিনি সরকারের উদ্দেশ্যের সাথে একমত হলেও, জালিয়াতি ও ত্রুটি ব্যবস্থায় ঢোকার আগেই নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়েছেন।

ব্যাংকিং খাত আরও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে নতুন ব্যবস্থাগুলো ব্যাংকগুলোকে প্রাপকদের অ্যাকাউন্ট তথ্য সরবরাহ করতে বাধ্য করতে পারে।

DWP বলছে, প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র সেসব অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা হবে যেগুলোতে ১৬,০০০ পাউন্ডের বেশি সঞ্চয় রয়েছে।

তথ্যমতে জানা যায়, নতুন ব্যবস্থা ২০২৯ সালের মধ্যে পুরোপুরি বাস্তবায়নের আগে সীমিত সংখ্যক ব্যাংক ও বিল্ডিং সোসাইটির মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে।

কাজ ও পেনশনস সেক্রেটারি লিজ কেন্ডাল বলেছেন, নতুন ক্ষমতার সাথে “গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা ব্যবস্থা” অন্তর্ভুক্ত থাকবে। যার মধ্যে স্বাধীন সংস্থার দ্বারা বার্ষিক পর্যালোচনা বাধ্যবাধকতামূলক করা হবে।

সূত্রঃ বিবিসি

এম.কে
২৫ জানুয়ারি ২০২৫

আরো পড়ুন

নির্বাচনকে সামনে রেখে যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টে পাস হলো ‘বিতর্কিত রুয়ান্ডা বিল’

ভারতীয় নার্স ও ডাক্তারদের আধিক্য এনএইচএসেঃ গবেষণা

যুক্তরাজ্য হোম অফিসের কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির সম্ভাবনা