নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি তিন মাস পর আবারও রাজনীতির মঞ্চে শক্ত অবস্থান জানান দিলেন। রাজধানী কাঠমান্ডুর কাছে ভক্তপুরে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) শুরু হওয়া নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি (ইউনিফায়েড মার্কসবাদী–লেনিনবাদী বা ইউএমএল)-এর তিন দিনব্যাপী জাতীয় কনভেনশনে অংশ নেন তিনি। দলীয় শক্তি প্রদর্শনের লক্ষ্যেই এই কনভেনশনের আয়োজন করা হয়েছে।
সমাবেশে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। আয়োজকদের দাবি, প্রায় তিন লাখ মানুষ এতে যোগ দেন। তবে পুলিশের হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আনুমানিক ৭০ হাজার মানুষ। রাজনৈতিক বিশ্লেষক পুরঞ্জন আচার্যের মতে, দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের পর রাজধানী অঞ্চলে এটি কোনো রাজনৈতিক দলের সবচেয়ে বড় সমাবেশ।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ‘জেন-জি’ প্রজন্মের নেতৃত্বে শুরু হওয়া দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন নেপালের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে তীব্রভাবে নাড়িয়ে দেয়। ওই আন্দোলন ও পরবর্তী সহিংসতায় ৭৭ জন নিহত এবং দুই হাজারের বেশি মানুষ আহত হন। সে সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট ও সংসদ ভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে।
পরিস্থিতির ভয়াবহতায় কয়েক দিনের জন্য সেনাবাহিনীকে কে পি শর্মা অলি সহ কয়েকজন শীর্ষ রাজনীতিককে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিতে হয়। পরে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সংসদ ভেঙে দেয়। সরকারের দাবি, এই অস্থিরতায় নেপালের প্রায় ৪২ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে আনুমানিক ৫৮৬ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
ইউএমএলের সভাপতি পদে পুনর্নির্বাচন প্রত্যাশী অলি সমাবেশে সংসদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক আখ্যা দেন। তিনি জানান, সংসদ পুনর্বহালের দাবিতে তার দল ইতোমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে।
সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে অলি বলেন, ‘আমাদেরকে জেন-জি তরুণদের বিরোধী হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। কিন্তু এটি সত্য নয়।’ তিনি তরুণদের আন্দোলনের প্রতি শত্রুতার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন।
আগামী সোমবার ইউএমএলের সভাপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে ভোট দেওয়ার যোগ্য প্রায় দুই হাজারের বেশি প্রতিনিধি রয়েছেন। এই নির্বাচনে অলির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তার উপসভাপতি ঈশ্বর পোখরেল। নির্বাচনে বিজয়ী নেতা আগামী ৫ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য সংসদীয় নির্বাচনে নেপালের সবচেয়ে বড় কমিউনিস্ট দলকে নেতৃত্ব দেবেন।
সূত্রঃ রয়টার্স
এম.কে

