দেশের আইন-কানুন নিজেদের উপর খাটবে না এমন বিশ্বাসী মানুষদেরকে পুলিশের জন্য হুমকিস্বরূপ মনে করছেন একদল বিশেষজ্ঞ। বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান এই আন্দোলনকে ‘সার্বভৌম নাগরিক আন্দোলন’ আখ্যা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা এবং বলছেন, তথাকথিত ‘সার্বভৌম নাগরিকরা’ মনে করছে তারা দেশের আইন-কানুনের উর্ধ্বে, আর এরই ফলাফল স্বরূপ সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় সহিংসতার ঘটনাগুলো ঘটছে।
সাংগঠনিক কাঠামোহীন এই আন্দোলনকে ‘ঘরোয়া সন্ত্রাসবাদ’ বলে অভিহিত করেছে এফবিআই এবং এর অনুসারীদের বলা হচ্ছে ‘সরকারবিরোধী চরমপন্থী’ যারা যুক্তরাষ্ট্রে শারীরিকভাবে বসবাস করলেও সেদেশ থেকে নিজেদের পৃথক বা সার্বভৌম বলে মনে করছে।
অস্ট্রেলিয়ায় এ সপ্তাহে লকডাউন আদেশের বিরোধিতাকারী একদল মানুষকে পুলিশের উপর হিংসাত্মকভাবে চড়াও হতে দেখা যায়। মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) ভিক্টোরিয়ার চিফ পুলিশ কমিশনার বলেন, মানুষ যদি প্রশ্নের জবাব বা নথি প্রদর্শন করতে অস্বীকার করে, তাহলে প্রয়োজনে গাড়ির কাঁচ ভেঙে তাদের টেনে বের করতে বাধ্য হবে পুলিশ।
এদিকে নিয়ম-কানুন মেনে চলার জন্য বিশ্বের কাছে সুনাম অর্জনকারী দেশ সিঙ্গাপুরেও আইন না মানার নজির দেখা গিয়েছে। এ বছরের মে মাসে ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখতে পাওয়া যায়, ৪০ বছর বয়সী এক নারী মুখে মাস্ক পড়তে অস্বীকার করছেন এবং বিভিন্ন অবজ্ঞাসূচক বাক্য ছুড়ে দিচ্ছেন পুলিশকে। পরে তাকে মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানা যায়।
গত সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত একটি ঝগড়ার জেরে বাড়িওয়ালার শিরশ্ছেদের অভিযোগে অভিযুক্ত এক ব্যক্তি সার্বভৌম নাগরিক হিসেবে মামলা থেকে মুক্তি পাওয়ার দাবি করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আধাসামরিক অস্ত্র প্রশিক্ষণ এবং সাংগঠনিক ভিত্তির উপর জোর দেওয়া অন্যান্য বেসামরিক আন্দোলনের থেকে ‘সার্বভৌম নাগরিক’ আন্দোলন অনেক আলাদা। সার্বভৌম নাগরিকরা সংবিধানবাদী, সাধারণ আইন নাগরিক, ফ্রিম্যান, ভীনগ্রবাসীসহ আরও অনেক নামে নিজেদের পরিচয় দেয় এবং আইনী যুক্তির পক্ষে থাকার দাবি করে।
০৫ আগস্ট ২০২০