>>> প্রকল্পে থাকছে চারটি ফ্লাইওভার, ১০টি আন্ডারপাস, ৪২টি ফুটওভার ব্রিজ
>>> থাকবে ছোট-বড় ৭০টি ব্রিজ
>>> নিশ্চিত করা হবে ৮০ কিলোমিটার গতিবেগ
বাংলাদেশের একটি অন্যতম ব্যস্ত পরিবহন রুট ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। কিন্তু প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটতে দেখা যায় মহাসড়কটিতে। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা মহাসড়কটির লেন স্বল্পতাকে চিহ্নিত করেছেন। এছাড়াও লেনের ঘাটতির কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় প্রায় সবসময়ই। তাই বহুদিন ধরেই মহাসড়কটি চারলেন করার দাবি জানিয়ে আসছে জনসাধারণ।
সম্প্রতি জানা যায়, সিলেটের মানুষের অনেক দিনের এই দাবি বাস্তবায়নে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চারলেন করার কাজ শুরু হতে যাচ্ছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী সড়কটিতে চারটি ফ্লাইওভার, ১০টি আন্ডারপাস, ৪২টি ফুটওভার ব্রিজ, তিনটি ট্রাক স্ট্যান্ড এবং দুটি রেস্টহাউস থাকবে।
সিলেট চা উৎপাদনে ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল। বর্তমানে এখানে বড় বড় শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে। এ অঞ্চলে রয়েছে বেশ কয়েকটি সিমেন্ট ও সার কারখানাও। সিলেটের পাথর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায়। অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ প্রচুর তেল ও গ্যাসের খনি রয়েছে। সঙ্গে যোগ হয়েছে পর্যটন খাত থেকে বিশাল আয়ের সম্ভাবনা। এসব কারণে এডিবি অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে চারলেন।
এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা টু সিলেট মহাসড়কে বাঁক সরলীকরণসহ অধিক মাত্রার ট্রাফিক বিবেচনায় এনে ৮০ কিলোমিটার গতিবেগ নিশ্চিত করা হবে। শিল্প ও বাণিজ্যে গতিশীলতা আনতে এশিয়া হাইওয়ে নেটওয়ার্ক, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাত দেশের জোট ‘বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক) করিডোর, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) করিডোরসহ আঞ্চলিক সড়ক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে চারলেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) চন্দন কুমার দে’র বরাত দিয়ে দেশের সংবাদমাধ্যমগুলো বলে, প্রকল্পের আওতায় পৃথক সার্ভিস লেনসহ সড়ক নির্মাণে অতিরিক্ত (৯৮৬ দশমিক ৪৭) একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। এর জন্য মোট ব্যয় হবে চার হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। ভূমি অধিগ্রহণে সিলেট থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত ইউটিলিটিও স্থানান্তর করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ৩২১টি আরসিসি কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। কালভার্টগুলোর মোট দৈর্ঘ্য হবে প্রায় এক হাজার ৩৮১ মিটার। ছোট-বড় ৭০টি ব্রিজসহ থাকবে। থাকবে পাঁচটি রেলওয়ে ওভারপাস।
প্রকল্পকের এসব বিষয় সার্বিক বিবেচনায় রেখেই প্রকল্পের ডিপিপি তৈরির কাজ করছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।
সিলেটের স্থানীয় জনসাধারণের মতে, এ অঞ্চলের উন্নয়নের দরজা খুলে দিবে চারলেনের ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক।
উল্লেখ্য, ঢাকা-সিলেট দূরত্ব ২১৪ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার চারলেন নির্মাণে উন্নয়ন সহযোগীর সন্ধানে ছিল সরকার। এরপর এডিবি তাদের তিন বছরের যে পরিকল্পনা করে, তাতে ঠাঁই পেয়েছে ঢাকা টু সিলেট চারলেন প্রকল্প।
১০ আগস্ট ২০২০
এমকেসি/এনএইচটি