সিলেট বিভাগের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে অবস্থিত শ্রীমুখ গ্রাম আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট গ্রাম হিসেবে আলোচনায় এসেছে। মাত্র ৬০ শতক (প্রায় ০.১৫ হেক্টর) জমির উপর গড়ে ওঠা এই গ্রামে বসবাস করে মাত্র একটি পরিবার—দুটি নারী, একজন শিশু ও একজন প্রবাসী পুরুষ। ভোটার সংখ্যা সর্বোচ্চ দুই থেকে তিনজন।
শ্রীমুখ গ্রামে এখনো কোনো পাকা রাস্তা নির্মিত হয়নি। বর্ষাকালে নৌকা ছাড়া যাতায়াত করা অসম্ভব এবং শুষ্ক মৌসুমে কাদা-মাটির ভেতর দিয়ে কষ্ট করে চলতে হয়। নষ্ট টিউবওয়েলের কারণে বাসিন্দাদের পুকুরের পানি পান করতে হয়। মৌলিক অবকাঠামো ও সরকারি সুবিধা থেকে এই পরিবারটি প্রায় বঞ্চিত।
সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী, শ্রীমুখ একটি স্বতন্ত্র গ্রাম হিসেবে গেজেটভুক্ত। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল জানিয়েছেন, বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গ্রাম হিসেবে পরিচিত ক্রোয়েশিয়ার ‘হাম’-এর জনসংখ্যা ৩০ জন, যা শ্রীমুখের তুলনায় অনেক বড়। সেই হিসেবে শ্রীমুখকে বিশ্বের ক্ষুদ্রতম গ্রাম হিসেবে দাবি করা যেতে পারে।
বিশ্বনাথ উপজেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা শ্রীমুখকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলে দ্রুত কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। যদি এই স্বীকৃতি অর্জিত হয়, তবে শ্রীমুখ বাংলাদেশের পর্যটন খাতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
গ্রামের মৌলিক অবকাঠামো উন্নয়ন—রাস্তা, পানির ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ ও নিরাপত্তা—নিশ্চিত করতে পারলে এটি পর্যটন ও গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হয়ে উঠবে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, প্রতিবেশী জমি ছাড়লে রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হবে।
একটি বাড়ি, পাঁচজন মানুষ এবং ক্ষুদ্র আয়তন—এই বৈশিষ্ট্যেই শ্রীমুখ গ্রাম দেশ-বিদেশের নজর কাড়ছে। সরকারি সহায়তা ও সচেতন উদ্যোগ থাকলে খুব শিগগিরই শ্রীমুখের নাম বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গ্রামের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে।
সূত্রঃ বিশ্বনাথ বিডি
এম.কে
০৪ আগস্ট ২০২৫