6.6 C
London
December 19, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

সিলেটে ,মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে, ‘মেগা জট’

সিলেটের উন্নয়নে বিগত সরকারের আমলে নেওয়া হয়েছিল কয়েকটি মেগা উন্নয়ন প্রকল্প। এসব প্রকল্পে আমূল পাল্টে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছিলেন সিলেটবাসী। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও অগ্রগতি নেই স্বপ্নের প্রকল্পগুলোর। মেগা প্রকল্পগুলো নিয়ে দেখা দেয় ‘মেগা জট’। চার বছরে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজ হয়েছে মাত্র ২২ ভাগ। নকশার ত্রুটির অজুহাতে প্রায় দুইবছর ধরে বন্ধ রয়েছে প্রকল্পের কাজ।

সিলেট-ঢাকা মহাসড়ককে ৬ লেনে উন্নীতকরণের আশ্বাস শুনতে শুনতে বিরক্ত সিলেটবাসী। ৬ বছরে মহাসড়কটির উন্নয়ন কাজ হয়েছে মাত্র ১১ ভাগ। আর সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চারলেনে উন্নিতকরণের কাজ দৃশ্যমানই হয়নি। ফলে মেগা প্রকল্পগুলো নিয়ে রীতিমতো আশাহত সিলেটের মানুষ।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ড. এ কে আবদুল মোমেন। তার বড় ভাই আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকার সময় থেকে তিনি ওসমানী বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ ও সিলেট-ঢাকা মহাসড়ককে ৬ লেনে উন্নিতকরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। দুটি প্রকল্পের জন্য তিনি আবুল মাল মুহিতকেও উদ্ধুদ্ধ করেন। মুহিতের সময়ে শুরু না হলেও মোমেন এসে প্রকল্প দুটির কাজে হাত দেন।

২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর ওসমানী বিমানবন্দর সম্প্রসারণ মেগা প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। প্রায় ২২০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পের আওতায় দ্বিতল বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন, ৬টি বোর্ডিং ব্রিজ, কনভেয়ার বেল্টসহ ৩৬টি চেক ইন কাউন্টার, ২৪টি পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টার, ৬টি এস্কেলেটর, ৯টি লিফট, ৩টি লাগেজ কনভেয়ার বেল্ট, কার্গো ভবন, জেট ফুয়েল ডিপো ও কন্ট্রোল টাওয়ারসহ আনুষাঙ্গিক আরও কিছু অবকাঠামো নির্মাণের কথা ছিল।

২০২০ সালের ১ অক্টোবর উদ্বোধন হওয়া প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু ২২ শতাংশ কাজ হওয়ার পর নকশায় ত্রুটির কথা বলে বন্ধ রাখা হয় প্রকল্পের কাজ। প্রায় এক পঞ্চমাংশ কাজ শেষ হওয়ার পর নকশায় ত্রুটি ধরা পড়ার বিষয়টিকে রহস্যজনক বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। অনেকের দাবি, সময়ক্ষেপণ করে প্রকল্পের বরাদ্দ বাড়ানোর পাঁয়তারা ও সঠিক তদরকির অভাবেই ওসমানী বিমানবন্দরের মেগা প্রকল্পটি আটকে রাখা হয়েছে।

সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণে প্রায় ১৭ হাজার টাকার প্রকল্প পাশ হয়। প্রকল্পের নকশা প্রণয়নের পর ২০২০ সালে এসে ত্রুটি ধরা পড়ে। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়ে ২০২৬ সালের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু গত চার বছরে কাজ হয়েছে মাত্র ১১ ভাগ। দীর্ঘদিনেও শেষ হয়নি সিলেট অংশের জমি অধিগ্রহণ।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মহাসড়কটি ৬ লেনে উন্নিতকরণের কাজ কোনভাবেই সম্ভব হবে না। সময়মতো কাজ শেষ না হওয়ায় ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়েও তৈরি হবে জটিলতা।

সিলেট-ঢাকা করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক একে মোহাম্মদ ফজলুল করীম গণমাধ্যমকে জানান- ভূমি অধিগ্রহণ কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পের কাজ নিজে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের ১১ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। ইতোমধ্যে বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো সময় বৃদ্ধি ও ক্ষতিপূরণের জন্য চিঠি দেয়া শুরু করেছে।

আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চারলেনে উন্নিতকরণের প্রকল্পটি নিয়েও হতাশা দেখা দিয়েছে। জমি অধিগ্রহণে আটকে আছে প্রকল্পের ভবিষ্যত। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ ছিল। কিন্তু এখনো প্রকল্পটির কাজ দৃশ্যমান হয়নি।

এ প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, উন্নয়ন বন্টনে সিলেট সবসময় পিছিয়ে ছিল। তাই উন্নয়নে সমতা আনতে প্রধান উপদেষ্টাসহ বর্তমান সরকারের উচিত সিলেটকে গুরুত্ব দেওয়া। অতীতে মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে জনপ্রতিনিধি হিসেবে ড. মোমেনের তদারকির অভাব ছিল। যেভাবে দায়িত্ব পালনের কথা ছিল তিনি সেভাবে করেননি। যে কারণে অনেক প্রকল্প সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন হয়নি, উল্টো থমকে গেছে।

এম.কে
১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

আরো পড়ুন

ড. ইউনূসকে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন আবু সাঈদের বাবা

বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে সম্মত

বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় শাবিপ্রবির ২২৫ গবেষক