একটি নামকে কেন্দ্র করে জেলা ও নগর যুবদলের কমিটিকে ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে সিলেটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ নিয়ে চলছে তীব্র সমালোচনা। দিনভর আলোচনার পর বিকালে দুটি কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে নগরে বিক্ষোভ হয়েছে। এ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে বলেও জানা যায়।
দীর্ঘ ২১ বছর প্রতীক্ষার পর বুধবার মধ্যরাতে সিলেট জেলা ও নগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। আর কমিটির তালিকা সিলেটে পৌঁছা মাত্র তোলপাড় শুরু হয়। যে নামটি ঘিরে নগর যুবদলের কমিটিতে তোলপাড় হচ্ছে সে নাম হচ্ছে এনামুল হক জাবেদ। তাকে নগর যুবদলের ২২ নম্বর সহ-সভাপতি করা হয়েছে।
যুবদলের অনেক নেতাই দাবি করেছেন; এনামুল হক জাবেদ হচ্ছে সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা। যুবলীগের নেতাদের সঙ্গে উঠবস করতেন। এ সংক্রান্ত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করতে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি পোস্ট করেছেন। এতে দেখা গেছে জাবেদ কখনো স্বেচ্ছাসেবক লীগের মিছিলের অগ্রভাগে, আবার কখনো জেলা যুবলীগ নেতাদের সঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছেন।
তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হওয়ার পর ঢাকায় অবস্থানরত জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি জানান; তারা অতীত দেখেই বর্তমান কমিটিতে জাবেদকে এনেছেন। ছবিসহ প্রমাণ তুলে ধরে তিনি বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা কমিটির সদস্য হিসেবে জাবেদ রয়েছে। একইসঙ্গে সে ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি’র কমিটির সদস্য হিসেবে বিগত সম্মেলনে অংশ নিয়ে ভোটও দিয়েছে।
এ ব্যাপারে এনামুল হক জাবেদ জানিয়েছেন, তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগ কিংবা যুবলীগের কমিটিতে কখনোই ছিলেন না। তিনি বিএনপি করেছেন, এখনো করছেন। বিএনপিকর্মী হওয়ার কারণে বিগত ১৫ বছর তিনি পালিয়ে বেড়িয়েছেন।
এদিকে- বিকালে নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে ঘোষিত দুটি কমিটির বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল বের করা হয়। নগরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা থেকে বের হওয়া মিছিলটি কোর্ট পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভ কর্মসূচির সময় বঞ্চিত নেতারা অবিলম্বে ঘোষিত দুটি কমিটি বাতিল করে নতুন করে কমিটি গঠনের দাবি জানান।
একইসঙ্গে তারা জেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। তারা জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদের নামেও অনেক অভিযোগ করেন। তারা দাবি করেন টাকা খেয়ে সিলেট সীমান্ত দিয়ে আওয়ামীলীগের দূর্নীতিবাজ নেতাসহ সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামানকে ভারত পাঠাতে বড় ভুমিকা ছিল মকসুদ আহমদের। মকসুদ আহমেদ মোটা অংকের টাকা কামিয়েছেন অবৈধ পথে ভারত পাঠানোর সময় সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান, শফিউল আলম নাদেল, রঞ্জিত সরকার ও সিলেট ০৩ এর সাবেক সাংসদ হাবিবের নিকট হতে।
মিছিলের নেতৃত্বে থাকা যুবদল নেতারা বলেন, টাকা খেয়ে এই কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে সীমান্ত চোরাচালানী, কখনও আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন না এরকম নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে আনা হয়েছে। এ ছাড়া স্বেচ্ছাসেবক লীগ থেকে নেতাদের এনে সহ-সভাপতির মতো পদ দেয়া হয়েছে। তারা বলেন, এ কমিটি দ্রুত বাতিল না করলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। পরবর্তীতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা সার্বিক বিষয় অবগত করবেন বলে জানান।
সূত্রঃ মানবজমিন
এম.কে
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪