6.1 C
London
November 26, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

স্যার কিয়ার স্টারমার কর্তৃক আগাম সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনা নাকচ

স্যার কিয়ার স্টারমার আগাম সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। দ্বিতীয়বার ভোট দেওয়ার দাবিতে করা একটি পিটিশনে দুই মিলিয়ন স্বাক্ষর সংগ্রহ হয়েছিল। তা সত্ত্বেও সাধারণ নির্বাচনের সম্ভাবনাকে নাকচ করে দেন যুক্তরাজ্যের বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী।

খবরে জানা যায়, পিটিশনটি গত সপ্তাহের শেষের দিকে চালু করা হয়েছিল এবং দাবি করা হয়েছে যে আরেকটি ভোট হওয়া উচিত। কারণ লেবার পার্টি চার মাস আগে ভূমিধস বিজয়ের পর ক্ষমতায় আসার পর তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো থেকে সরে এসেছে।

স্যার কিয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি মাত্র চার মাস ধরে ক্ষমতায় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি আরেকটি নির্বাচন ডাকার পক্ষে নন।

তবে তিনি বলেছেন, “লেবারকে সমর্থন করতে চান না এমন লোকদের দ্বিতীয়বার ভোট দেওয়ার ইচ্ছায় আমি অবাক নই।”

তিনি আইটিভির গুড মর্নিং ব্রিটেন অনুষ্ঠানে বলেন,
“দেখুন, আমি নিজেকে মনে করিয়ে দিই যে গত নির্বাচনে অনেক মানুষ লেবারকে ভোট দেননি। আমি অবাক নই যে তাদের মধ্যে অনেকেই আবার ভোট চান। তবে আমাদের সিস্টেম এভাবে কাজ করে না। অনেক লোকই আমাদের প্রথমে ক্ষমতায় দেখতে চাননি। তাই আমার মূল ফোকাস হলো প্রতিদিন যে সিদ্ধান্তগুলো আমাকে নিতে হয়, সেগুলোতে।”

সরকারি ওয়েবসাইটে করা পিটিশনগুলো ১০,০০০ স্বাক্ষর পেলে তা সংসদে বিতর্কের জন্য বিবেচনা করা হয়। স্বাক্ষরের সংখ্যা ১,০০,০০০ পৌঁছালে সরকার প্রতিক্রিয়া জানায়।

স্যার কিয়ার আগাম নির্বাচন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেও এটি খুব একটা সম্ভাবনা ছিল না, কারণ লেবার পার্টির বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে এবং শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী রাজাকে অনুরোধ করতে পারেন একটি সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের জন্য।

গত সপ্তাহে, কনজারভেটিভ পার্টির ডানপন্থী এমপি এবং রিফর্ম ইউকে পার্টির কিছু নেতা সামাজিক মাধ্যমে পিটিশনটি স্বাক্ষরের জন্য জনগণকে উৎসাহিত করেন।

রিফর্ম ইউকের ডেপুটি লিডার রিচার্ড টাইস এবং কনজারভেটিভ শ্যাডো বিজনেস সেক্রেটারি অ্যান্ড্রু গ্রিফিথ এই পিটিশনটি শেয়ার করেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ এবং বিলিয়নিয়ার এক্সের মালিক ইলন মাস্ক একটি পোস্টের লিঙ্ক পুনঃটুইট করেন, যেখানে বলা হয়েছিল যে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পিটিশনটি ২,০০,০০০ স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছে। তিনি লিখেছেন, “অবিশ্বাস্য।”

ইলন মাস্ক আগে স্যার কিয়ার স্টারমারের সমালোচনা করেছেন এবং অভিযোগ তুলেছেন যে পুলিশ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সাথে আলাদা আচরণ করছে।

কিছু এক্স ব্যবহারকারী বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজনকে পিটিশন স্বাক্ষরের আহ্বান জানিয়েছেন এবং ইউকে ভোটার হিসেবে নিজেকে পরিচিত করতে পোস্টকোডের একটি তালিকাও সরবরাহ করেছে।

সরকার সম্প্রতি কিছু নীতির কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে, যার মধ্যে রয়েছে: উত্তরাধিকার কর বৃদ্ধি, শীতকালীন জ্বালানি ভাতা কাটা, নিয়োগকারীদের জাতীয় বীমা বৃদ্ধি, এবং প্রাইভেট স্কুলের ফি-তে ভ্যাট প্রয়োগ।

তথ্যমতে জানা যায়, পিটিশনটি ওয়েস্ট মিডল্যান্ডের ওল্ডবারির ওয়াগন অ্যান্ড হর্সেস পাবের মালিক মাইকেল ওয়েস্টউড চালু করেন।

তিনি ডেইলি এক্সপ্রেস-কে বলেন, “আমি মনে করি মানুষ এরই মধ্যে অনেক কিছু দেখেছে। আমেরিকায় কী ঘটেছে, তার প্রভাবও পড়েছে। আর মানুষ এখন দেখছে যে একসাথে দাঁড়িয়ে ভোট দিলে পরিবর্তন আনা সম্ভব।”

সর্বশেষ ইপসোস রাজনৈতিক জরিপে দেখা গেছে যে লেবার পার্টি খুব একটা ভালো অবস্থানে নেই। জনমতের মাত্র ২৮% তাদের পক্ষে, যেখানে ৪৯% তাদের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন।

ক্ষমতায় আসার পর থেকে লেবার পার্টির সামগ্রিক পারফরম্যান্স ১০-এর মধ্যে মাত্র ৪ হিসেবে মূল্যায়িত হয়েছে।

অধিকাংশ (৫৬%) মনে করেন যে দেশ ভুল পথে এগোচ্ছে, এবং পাঁচজনের মধ্যে দুইজন বলেছেন যে লেবার ক্ষমতায় আসার পর থেকে তাদের আর্থিক অবস্থার অবনতি হয়েছে।

সূত্রঃ স্কাই নিউজ

এম.কে
২৭ নভেম্বর ২০২৪

আরো পড়ুন

জেনে নেই রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে যুক্তরাজ্যের রাজার কাজ

বাংলাদেশি লেবার কাউন্সিলরকে ৩০ হাজার পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দিবে বিবিসি

এপ্রিল থেকে কোম্পানিগুলোর বিদ্যুৎ বিলে ভর্তুকি কমানো হবে