TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিক

হানিয়াকে ‘নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে’ হত্যা করা হয়েছে

তেহরানে হানিয়ার ব্যক্তিগত বাসভবনে নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত হেনে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এক সৌদি গণমাধ্যম।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়া ইরানের রাজধানী তেহরানে এক গুপ্ত হামলায় নিহত হয়েছেন।

সৌদি গণমাধ্যম আল হাদাৎ বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার রাতে তেহরানে হানিয়ার ব্যক্তিগত বাসভবনে নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত হেনে এই হামাস নেতাকে হত্যা করা হয়েছে।

গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় রাত প্রায় ২টার দিকে ক্ষেপণাস্ত্রটি হানিয়া যে ভবনে ছিলেন সেখানে আঘাত হানে।

ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা ফারস নিউজও একই ধরনের খবর দিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের মুখপাত্র ফারস জানিয়েছে, হানিয়া উত্তর তেহরানে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের এক আবাসিক এলাকায় ছিলেন আর সেখানে ‘আকাশ থেকে আসা একটি অস্ত্রের আঘাতে’ নিহত হয়েছেন।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার সীমান্ত সংলগ্ন দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের যোদ্ধারা নজিরবিহীন আক্রমণ চালিয়ে প্রায় ১২০০ জনকে হত্যা ও বহু ইসরায়েলিকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে রেখেছিল। এর প্রতিক্রিয়া গাজায় ভয়াবহ পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল আর তারা হামাসকে নির্মূল করার প্রত্যয় জানায়। তারপর থেকে নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরায়েলের অবিরাম নির্বিচার হামলায় ৪০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক।

এর মধ্যে উভয়পক্ষ গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে আলোচনা চালাচ্ছে। হানিয়া হামাসের পক্ষ থেকে এই আলোচনা তত্ত্বাবধান করছিলেন। কিন্তু আলোচনা কোনো চুক্তিতে পৌঁছানোর আগেই তাকে হত্যা করা হল।

এই হত্যাকাণ্ড এমন এক সময় ঘটল যখন গাজা যুদ্ধের জেরে লেবাননের রাজনৈতিক ও সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের পাল্টা হামলার ঘটনা আরও বড় আকারে ছড়িয়ে পড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শনিবার ইসরায়েল অধিকৃত গোলান মালভূমিতে এক রকেট হামলায় ১২ শিশু-কিশোর নিহত হয়। এই হামলার জন্য ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাকে দায়ী করে ইসরায়েল।

মঙ্গলবার রাতে লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাংশে হিজবুল্লার শক্তি কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হিজবুল্লাহর সামরিক অভিযানের প্রধান ফুয়াদ শুকুরকে লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়েছে আর তাতে শুকুর নিহত হয়েছেন বলে দাবি ইসরায়েলের।

ইসরায়েল এখনও পর্যন্ত হানিয়ার হত্যাকাণ্ড নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা বিদেশি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন নিয়ে কোনো মন্তব্য করে না। তবে তারা জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে দেখছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বুধবার নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।

হানিয়া হত্যা নিয়ে ইসরায়েল মন্তব্য না করলেও এর আগে তারা ইরানের পারমাণবিক প্রকল্পের শীর্ষ বিজ্ঞানীদের চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে হত্যা করেছিল। ২০২১ সালে ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিজাদেহকে এ ধরনের এক হামলায় হত্যা করেছিল ইসরায়েল।

সূত্রঃ আল হাদাৎ

এম.কে
৩১ জুলাই ২০২৪

আরো পড়ুন

ব্রিটিশ অভিবাসন আইনে দফায় দফায় পরিবর্তন, লক্ষ্য বিদেশি শিক্ষার্থী

গাজাবাসীর জন্য ৫০০০ ফ্রি ভিসা দেবে কানাডা

জার্মান বিমানবাহিনী প্রধানের ‘ভুলে’ ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর তথ্য ফাঁস