যুক্তরাজ্যের মুসলিমদের নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান হতে ধাক্কা খেয়ে আমানি কিলাওয়ি নিজেদের উদ্যোগে গঠন করেন মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য প্রতিষ্ঠিত ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম লঞ্চগুড।
আমানি কিলাওয়ি তার নিজের সংগ্রামের ইতিহাস বলতে গিয়ে জানান, বিভিন্ন ব্যাংক এবং পেমেন্ট প্রসেসর আমানি এবং তার কো-ফাউন্ডারদের মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য প্রতিষ্ঠিত ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম লঞ্চগুড-এর সাথে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানায়।
তিনি আরও জানান, কয়েকটি ব্যাংক তাদেরকে জানিয়েছে মুসলিম এবং আরবি নাম সনাক্ত করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
স্ট্রাইপ পাঁচ বছর কাজ করার পর ঘোষণা দেয় যে তারা ক্রাউডফান্ডিং খাতে তাদের কাজ সীমাবদ্ধ করছে এবং আন্তর্জাতিক মানবিক কাজে আর অংশ নেবে না। যখন ক্রাউডফান্ডিং খাত আন্তর্জাতিক মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছিল তখনই ঋণাত্মক এই খবরে বিপর্যয়ে পড়ে লঞ্চগুড।প্রতিবারের প্রত্যাখ্যান লঞ্চগুডের অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় তৈরি করেছিল।
আমানি কিলাওয়ি বলেন, “ যদি আপনি পেমেন্ট গ্রহণ করতে না পারেন, তবে আপনি কোম্পানি হিসেবে টিকে থাকতে পারবেন না।”
এ ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে কিলাওয়ি ও তার সহপ্রতিষ্ঠাতারা বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করেন। তারা বিভিন্ন পেমেন্ট প্রোভাইডার ও ব্যাংকের সঙ্গে কাজ শুরু করেন, যাতে কোনো একটি প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ করে দিলে তাদের ব্যবসা বন্ধ না হয়।
১০ বছরের মধ্যে লঞ্চগুড মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি পরিচিত নাম হয়ে উঠেছে এবং প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলার অর্থ সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষ করে রমজান মাসে স্বয়ংক্রিয় দান কার্যক্রম চালুর জন্য এটি বিখ্যাত হয়ে উঠেছে।
“হালাল” পণ্য ও সেবা বাজারের আকার বর্তমানে ২ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। তবে মুসলিম ব্যবসাগুলো প্রায়ই বৈষম্যের শিকার হয়। এ কারণেই কিলাওয়ি লঞ্চগুড থেকে সরে এসে পে-গুড নামে একটি পেমেন্ট প্রসেসর চালু করেন, যা মুসলিমদের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য সেবা প্রদান করে।
বিশেষত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে মুসলিম প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা বদলেছে। তারা কেবল হালাল সেবা নয় বরং ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে আরও সরব হয়েছে।
অ্যাডিল আবু তালহা তার বয়ক্যাট অ্যাপটি তৈরি করেছেন। যা ব্র্যান্ড সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করে এবং বিকল্প পণ্য প্রস্তাব করে। অন্যদিকে, মাকানি হোমস মুসলিম-বান্ধব ভ্রমণের জন্য সেবা প্রদান করে এবং এয়ারবিএনবির বিকল্প হিসেবে কাজ করছে।
কিলাওয়ি বলেন, “এখনই সময়। আজকের দিনে ব্যবসা শুরু করা আগের চেয়ে অনেক সহজ। মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর আস্থা রাখার এটি একটি উপযুক্ত সময়।”
মাকানি এবং বয়ক্যাটের মতো সংস্থাগুলোর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠাতারা একটি ক্রমবর্ধমান চাহিদার জবাব দিয়েছেন। তাদের মূল কাজ ব্যবহারকারীদের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে সাহায্য করা।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
০৩ জানুয়ারি ২০২৫