TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিকবাংলাদেশ

“হিন্দিই সরকারি ভাষা”—বাংলা না বলায় ইন্টার্ন ফার্মাসিস্টের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও তদন্ত শুরু

শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে এক ইন্টার্ন ফার্মাসিস্টের বিরুদ্ধে ভুল ওষুধ দেওয়া এবং বাংলা ভাষায় কথা বলতে অস্বীকৃতি জানানোর অভিযোগে তীব্র প্রতিক্রিয়া ছড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার ঘটে যাওয়া এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতাল চত্বরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, স্থানীয়রা অভিযুক্ত ফার্মাসিস্টের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা দাবি করেন।

জানা গেছে, উত্তর দিনাজপুরের দালখোলা থেকে এক পরিবার তাদের অসুস্থ সন্তানকে চিকিৎসার জন্য শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রেসক্রিপশন নিয়ে তারা ফার্মেসিতে যান। অভিযোগ, সেখানে দায়িত্বে থাকা এক ইন্টার্ন ফার্মাসিস্ট হিন্দি ছাড়া অন্য ভাষায় কথা বলতে রাজি হননি। পরিবারের অনুরোধে তিনি সোজাসাপটা বলেন, “হিন্দিই সরকারি ভাষা, আমি বাংলায় কথা বলব না। বুঝতে না পারলে হিন্দি শিখে নিন।”

ঘটনাটি এখানেই থেমে থাকেনি। পরিবারটি সন্দেহ হওয়ায় হাসপাতালের বাইরে এক বেসরকারি ফার্মেসিতে প্রেসক্রিপশন যাচাই করলে দেখা যায়, দেওয়া ওষুধের একটি ভুল। আতঙ্কিত হয়ে তারা আবার হাসপাতালে ফিরে আসে। অন্য এক ফার্মাসিস্ট ওষুধটি পরিবর্তন করলেও, একই ইন্টার্ন ফার্মাসিস্ট বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও বাংলায় কথা বলতে অস্বীকার করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

শিশুটির পরিবারের সদস্য রণজিৎ সাহা জানান, “তিনি আমাদের ভুল ওষুধ দিয়েছেন। আমরা বাইরে যাচাই না করলে সন্তানের ক্ষতি হতে পারত। এত বড় ভুলের পরও তিনি ভাষা নিয়ে আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন।”

ঘটনার পরই বাংলা ভাষা রক্ষার সংগঠন ‘বাংলা পক্ষ’ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ দেখায়। সংগঠনের প্রতিনিধি রাজাত ভট্টাচার্য বলেন, “বাংলার সরকারি হাসপাতালে রোগীদের কেন হিন্দিতে কথা বলতে বাধ্য করা হবে? বাংলা জানা তরুণদের চাকরির সুযোগ না দিয়ে অ-বাঙালিদের নিয়োগ দেওয়াই আজকের এই সমস্যার মূল।”

‘মিলেনিয়াম পোস্ট’-এর প্রতিবেদনে হাসপাতালের সুপার ডা. চন্দন ঘোষ জানান, অভিযুক্ত ফার্মাসিস্ট একজন ইন্টার্ন এবং বর্তমানে প্রশিক্ষণকালীন অবস্থায় রয়েছেন। তিনি বলেন, “ওষুধের ভুলটি সঙ্গে সঙ্গে সংশোধন করা হয়েছে। একটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পেয়েছি, এবং এ বিষয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ঘটনাটি শুধু চিকিৎসাগত গাফিলতি নয়, বরং বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি অবমাননার উদাহরণ। তারা প্রশাসনের কাছে দাবি তুলেছেন, সরকারি হাসপাতালে বাংলা ভাষা ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া হোক।

সূত্রঃ মেডিকেল ডায়লগ

এম.কে

আরো পড়ুন

মণিপুরের ঘটনায় শিউরে উঠেছেন অক্ষয় কুমার

আইন পাস করে ইসরায়েলিদের নিষিদ্ধ করল মালদ্বীপ

আকর্ষণীয় বেতনে ১০ হাজার বাংলাদেশী কর্মী নেবে মালদ্বীপ