ব্রিটেনের অভিবাসন ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কারের ইঙ্গিত দিয়েছে সরকারের সাম্প্রতিক প্রকাশিত হোয়াইট পেপার। যদিও এখনো এটি আইনে পরিণত হয়নি, তবে প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো অভিবাসীদের জন্য দীর্ঘতর এবং কঠিনতর একটি প্রক্রিয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
হোয়াইট পেপারে উল্লেখিত প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে পাঁচ বছরের পরিবর্তে দশ বছরের দীর্ঘ ‘সেটেলমেন্ট’ রুট, আরও কঠোর ‘চরিত্র মূল্যায়ন’, এবং আবেদন প্রত্যাখ্যানের ক্ষেত্রে অধিকতর প্রশাসনিক স্বাধীনতা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি অভিবাসীদের জন্য একটি নতুন বাস্তবতা তৈরি করতে চলেছে, যেখানে অতীতের ছোটখাটো ভুল বা অপরাধও বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে স্থায়ী বসবাস পাওয়ার পথে।
বিশিষ্ট অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিবর্তনগুলি একেবারে নতুন কিছু নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরে একটি অনানুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়া ‘দশ-বছরের রুট’-কেই এবার সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। এর মাধ্যমে তারা স্থায়ী বসবাসের যোগ্যতা অর্জনের জন্য সময়, আচরণ এবং সমাজে অবদানকে গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড হিসেবে নির্ধারণ করছে।
এক অভিবাসন আইনজীবী এক বিবৃতিতে বলেন, “নতুন হোয়াইট পেপার হয়তো কঠিন, কিন্তু এটি আমাদের জানিয়ে দিয়েছে কী কী প্রয়োজন। এখনই সময় নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার — ইংরেজি শেখা, কমিউনিটিতে অবদান রাখা, নৈতিক চরিত্রের প্রমাণ সংগ্রহ করা।”
তিনি আরও বলেন, “আইন কেবল নিয়ম নয়, এটি একজন মানুষের জীবনযাত্রাকেও বিবেচনা করা উচিত। আইনজীবী হিসেবে আমরা অতীতেও অন্যায় বা বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করেছি, ভবিষ্যতেও করবো।”
উল্লেখ্য, প্রস্তাবিত আইনি কাঠামোতে যারা ইতোমধ্যে পাঁচ-বছরের রুটে রয়েছেন, তারা সেটিতে থাকতে পারবেন, যদি না তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। তবে সেক্ষেত্রেও তাদের ধীরে ধীরে দশ-বছরের রুটে স্থানান্তরের ঝুঁকি থেকে যায়।
ইলেকট্রনিক ইমিগ্রেশন নেটওয়ার্ক (EIN), একটি নিবন্ধিত দাতব্য সংস্থা, এই বিষয়ক বিশ্লেষণ প্রকাশ করে অভিবাসীদেরকে ইতিবাচকভাবে প্রস্তুত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। তারা বলছে, “এই সময়টুকু যথাযথভাবে কাজে লাগানোই হতে পারে ভবিষ্যতের নিরাপত্তার চাবিকাঠি।”
তবে এখনো এটি আইন হয়নি, এবং আনুষ্ঠানিকভাবে সংসদে উপস্থাপন ও অনুমোদনের আগে পরিবর্তনের সুযোগ থেকেই যাচ্ছে। আইনজীবীরা পরামর্শ দিয়েছেন, অভিবাসন সংশ্লিষ্ট যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পেশাদার পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
সূত্রঃ ইলেকট্রনিক ইমিগ্রেশন নেটওয়ার্ক একটি নিবন্ধিত দাতব্য সংস্থা। চ্যারিটি নম্বর: ১০৫৯১৪৭.
এম.কে
১৪ মে ২০২৫