আনুষ্ঠানিক অভিষেক হচ্ছে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের। এর মধ্য দিয়ে মা দ্বিতীয় এলিজাবেথের উত্তরসূরি হিসেবে ব্রিটিশ সিংহাসনে বসছেন তিনি। শুধু যুক্তরাজ্য নয়, সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ বা কমনওয়েলথভুক্ত আরও ১৪টি দেশের রাজা হচ্ছেন চার্লস।
৬ মে লন্ডনে যুক্তরাজ্যের রাজা হিসেবে তৃতীয় চার্লসের অভিষেক। এর মধ্য দিয়ে চার্লস আনুষ্ঠানিকভাবে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, ব্রাহামাস, বেলিজ, গ্রেনাডা, জ্যামাইকা, পাপুয়া নিউগিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, টুভালু, সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রেনাদাইনসের রাজারও দায়িত্ব নিচ্ছেন।
আটলান্টিক মহাসাগর ও ক্যারিবীয় সাগরের মধ্যবর্তী জায়গায় ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস। ক্যারিবীয় অঞ্চলে এখানেই প্রথম ব্রিটিশ উপনিবেশ সাম্রাজ্যের সূর্য উদিত হয়। তবে অনেক দেশই এই রাজাপ্রথাকে আর ভালো চোখে দেখছে না।
সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসের একটি পানশালার ম্যানেজার জুলিয়ান মরটন বলেন, ‘রাজার অধীন না থেকে প্রজাতন্ত্র হওয়া ভালো। এতে বিশ্ববাসী বুঝতে পারবে, আমরা আমাদের নিজেদের বিষয়গুলো নিজেরাই সামলাতে পারি।’
রাষ্ট্রপ্রধানের পদ থেকে ব্রিটিশ রাজাকে সরাতে হলে ক্যারিবীয় দেশগুলোয় গণভোট আয়োজন করতে হবে। শুধু বেলিজের পার্লামেন্ট চাইলে নিজেরাই এ উদ্যোগ নিতে পারে। এর আগে ২০০৯ সালে সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রেনাদাইনসে এমন একটি গণভোট আয়োজন করা হয়েছিল। এই গণভোটে ৪৫ শতাংশ ভোটার রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে তাদের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দেখতে চাননি।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে চার্লসের অভিষেকের বিষয়ে ৭৩ বছর বয়সী গ্রাহাম বলেন, ‘আমি এটা নিয়ে চিন্তাও করি না, এটা অপ্রাসঙ্গিক।’
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের মতে, একদিন না একদিন রাজতন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসবে অস্ট্রেলিয়া। এটা অনিবার্যভাবে হবে। এ প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে দেশটিতে একজন কনিষ্ঠ মন্ত্রীও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিনস মনে করেন, একদিন তার দেশ রাজতন্ত্রের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে দেবে।
বিশ্লেষকদের মতে, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের যতটা গ্রহণযোগ্যতা ছিল, ততটা চার্লসের নেই। তাই কমনওয়েলভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তার টিকে থাকা কঠিন হতে পারে। তার আমলে অনেকগুলো দেশই রাজতন্ত্র থেকে বেরিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ জোরেশোরে নিতে পারে।