লন্ডনের আকাশচুম্বী ভাড়ার বাজারে যখন অনেকের পক্ষে ছাদের নিচে থাকা দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে, তখন স্থপতি হ্যারিসন এক অভিনব সমাধান খুঁজে নিয়েছেন—তিনি বসবাস করছেন একটি ডাম্পস্টারে তৈরি ঘরে। ছোট্ট কিন্তু চমকপ্রদ এই বাসস্থানটি শহরের আবাসন সংকটের বিকল্প হিসেবে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় এসেছে।
ইউটিউবার ড্রু বিনস্কি লন্ডনের অস্বাভাবিক ও সংকীর্ণ বাসস্থানগুলো নিয়ে একটি অনুসন্ধানী ভিডিও তৈরি করেন, যেখানে তিনি হ্যারিসনের ‘ডাম্পস্টার হোম’ ঘুরে দেখেন। স্থপতি হ্যারিসন নিজেই মাত্র তিন সপ্তাহে তৈরি করেছেন চার বর্গমিটারের এই ঘরটি, যার নির্মাণ খরচ প্রায় ৪,০০০ থেকে ৫,০০০ পাউন্ড।
তিনি জানান, “তিন বছর আগে থাকার জায়গা খুঁজতে গিয়ে মাথায় আসে এই ধারণা। লন্ডনের ভাড়া পাগল করে দিচ্ছিল, তাই ভাবলাম অন্য কোনো পথ নিশ্চয় আছে।”
ডাম্পস্টারের ভেতরের সাজসজ্জা অবিশ্বাস্যরকম সৃজনশীল। উপরে একটি বিছানা, নিচে রান্নাঘর ও বসার জায়গা—সবকিছু সুচারুভাবে গুছিয়ে রাখা। দেয়ালে বসানো রক ক্লাইম্বিং সেটার দিয়ে হ্যারিসন উঠেন বিছানায়, যেন ক্ষুদ্র পরিসরেও রোমাঞ্চের ছোঁয়া।
এই স্থাপনা যে শুধুই কল্পনার ফসল নয়, তা প্রমাণ করেন হ্যারিসন। তিনি প্রতি মাসে ২৫০ পাউন্ড (প্রায় ৩৪০ ডলার) ভাড়া দেন শুধু জমির জন্য, আর বিদ্যুৎ ও পানির খরচ মিলিয়ে মাসে মাত্র ৩০ পাউন্ড।
বাসস্থানের একমাত্র অসুবিধা হলো বাথরুমের অভাব। বাইরে একটি পোর্টেবল টয়লেট ব্যবহার করেন তিনি, যা প্রতি দুই সপ্তাহে পরিষ্কার করা হয়। গোসলের জন্য হ্যারিসন নির্ভর করেন অফিস ও জিমের ওপর। “এই জীবনধারা নিঃসন্দেহে চ্যালেঞ্জিং,” স্বীকার করেন তিনি, “কিন্তু স্বাধীনতার অনুভূতিটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
ড্রু বিনস্কির ভিডিও প্রকাশের পর দর্শকরা বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ বলেছেন, “এটা অবিশ্বাস্যভাবে ডিস্টোপিয়ান,” আবার কেউ মন্তব্য করেছেন, “মানুষ কতটা সৃজনশীল হতে পারে, তা দেখে মুগ্ধ হয়েছি। এতে নিজের জীবনকে আরও বেশি মূল্য দিতে শিখছি।”
সূত্রঃ ইউ এন টেক
এম.কে

