একটি টেলিভিশন আলোচনায় জুলকারনাইন সায়ের মন্তব্য করেছেন যে, নাহিদ ইসলাম “সেইফ এক্সিট” প্রসঙ্গে যা বলেছেন, তা ভুল নয় বরং বাস্তবভিত্তিক ও বিবেচনাপ্রসূত।
উক্ত আলোচনায় উপস্থাপিকা উল্লেখ করেন যে, “সেইফ এক্সিট” (Safe Exit) শব্দটি বর্তমানে রাজনৈতিক মহলে বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে। তিনি জানতে চান, উপদেষ্টারা কি আদৌ ‘সেইফ এক্সিট’-এর কথা ভাবছেন?
জবাবে, জুলকারনাইন সায়ের বলেন,নাহিদ ইসলাম বলেছেন যে, কিছু উপদেষ্টা নিজেদের আখের গুছিয়ে নিয়েছেন এবং গণআন্দোলনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন—এ কথা পুরোপুরি সঠিক।
জুলকারনাইন সায়ের আলোচনায় আরও উল্লেখ করেন, একজন উপদেষ্টার স্বামী আবু বকর সিদ্দিক ও ছেলে প্রায় ৪০০-৫০০ কোটি টাকার মূল্যমানের একটি ফ্যাক্টরি (Hamid Sweaters) নিজেদের নামে স্থানান্তর করেন।
উক্ত ফ্যাক্টরিতে প্রায় ৬০০ কর্মী কাজ করেন এবং এর মালিকানা পূর্বে ছিল নসরুল আহমেদ দিপু ও তার ভাই ইনতেখাবুল হামিদ-এর নামে। এই হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় কোনো প্রাতিষ্ঠানিক দলিল পাওয়া যায়নি এবং তিনি একে “বিশ্বাসঘাতকতা” আখ্যা দেন।
তাছাড়া, আরেক উপদেষ্টার ভাইয়ের মোতালেব প্লাজায় দোকান কেনা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন জুলকারনাইন, যদিও এর পেছনে সরাসরি প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানান।
তিনি আরও দাবি করেন, কিছু ফোন কল রেকর্ড তার হাতে এসেছে, যেখানে হোটেল কক্ষে ঘুষ চাওয়া ও নো অবজেকশন (No Ha) পাওয়ার বিনিময়ে অর্থ লেনদেনের আলাপ হয়।
তিনি বলেন, থাকরাল (Thakral) নামে একটি ভারতীয় ও সিঙ্গাপুর ভিত্তিক কোম্পানি আগের সরকারের আমল থেকে একের পর এক চুক্তি পাচ্ছে।একটি প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সালে প্রস্তাবিত একটি প্রকল্প মে ২০২৫-এ ফয়েজ তায়েব অনুমোদন করেন।প্রকল্পটি ছিল ৪.৬ মিলিয়ন ডলারের, যা এইচ (H) প্রকল্পের অধীনে সম্পাদিত হয়।
জুলকারনাইন সায়ের বলেন,বেল্লাল হোসেন চৌধুরী, একজন সাবেক এনবিআর কর্মকর্তা, যিনি ৫ কোটি টাকার সম্পদ গোপনের অভিযোগে দুদকের তদন্তাধীন ছিলেন, তিনি উচ্চ আদালতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ব্যর্থ হলেও পরে নিম্ন আদালত থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বিদেশ চলে যান।
বর্তমানে তিনি একজন ওএসডি (Officer on Special Duty) হলেও, পূর্বে তাকে কাস্টমস ট্রাইব্যুনালের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, যা জুলকারনাইনের ভাষায় “দায়িত্বের চরম অপব্যবহার”।
এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগে তিনি মূল ভূমিকা পালন করতেন বলেও দাবি করেন জুলকারনাইন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে তদন্ত করা উচিত ছিল।”
নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জুলকারনাইন সায়েদ বলেন,“আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলে বোঝা যাবে, নির্বাচন সময়মতো হবে কি না।”
তিনি বলেন, ভোটারদের প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময় নিশ্চিত করতেই হবে।নভেম্বরের শেষে কিংবা ডিসেম্বরের শুরুতে নির্বাচন হলে, প্রায় ১২ কোটি ভোটারের প্রস্তুতি নিতে সময় প্রয়োজন।
সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া
এম.কে
১৬ অক্টোবর ২০২৫