18.1 C
London
September 18, 2025
TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিক

৪ বার কল দিয়েছেন ট্রাম্প, ধরেননি মোদি

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনে কথা বলার জন্য অন্তত চারবার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ভারতীয় এ নেতা তার ফোন ধরেননি। জার্মান সংবাদপত্র ফ্রাঙ্কফুর্টার অ্যালজেমেইন (Frankfurter Allgemeine) এ খবর প্রকাশ করেছে। সংবাদপত্রটি বলেছে, মোদি গভীর ক্রোধের পাশাপাশি তার ‘সতর্কতা’ হিসেবে ট্রাম্পের কল এড়িয়ে গেছেন।
ট্রাম্প এমন এক সময়ে মোদিকে কল দেন, যখন তার প্রশাসন ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এ শুল্ক ব্রাজিল ছাড়া অন্য কোনো দেশের জন্য সর্বোচ্চ।
বার্লিনভিত্তিক গ্লোবাল পাবলিক পলিসি ইনস্টিটিউটের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক থরস্টেন বেনার এক্সে সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের একটি কপি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘ফ্রাঙ্কফুর্টার অ্যালজেমেইন দাবি করেছে, ট্রাম্প সম্প্রতি মোদিকে চারবার ফোন করেছিলেন। কিন্তু মোদি ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।’
ফ্রাঙ্কফুর্টার অ্যালজেমেইন জানিয়েছে, মোদির মধ্যে এমন কিছু লক্ষণ দেখা গিয়েছিল, যাতে বোঝা যায়, তিনি অপমানিত বোধ করেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প সাধারণত অন্য দেশগুলোর মার্কিন বাজারের ওপর নির্ভরতাকে কাজে লাগিয়ে সুবিধা আদায় করেন। কিন্তু মোদি তার প্রথম মেয়াদে ভারতের অর্থনৈতিক স্বার্থে কোনো আপস না করে ট্রাম্পের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রেখে ‘এর প্রতিরোধ’ করেছিলেন।
প্রতিবেদনে মোদির এ সতর্কতার কারণও ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এর আগে ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসিডেন্ট টো লামের সঙ্গে মাত্র একটি ফোনকলে বাণিজ্য চুক্তি পুনর্গঠন করেছিলেন, যা দুই দেশের প্রতিনিধিদল অনেক কষ্ট করে সাজিয়েছিল। কিন্তু কোনো চুক্তি না হলেও ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, একটি বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। ফ্রাঙ্কফুর্টার অ্যালজেমেইনের মতে, মোদি একই ফাঁদে পড়তে চান না।
নিউইয়র্কের দ্য নিউ স্কুলের ইন্ডিয়া-চায়না ইনস্টিটিউটের সহপরিচালক মার্ক ফ্রেজিয়ার বলেন, মার্কিন কৌশল কাজ করছে না। যুক্তরাষ্ট্র চীনের মোকাবিলায় ভারতকে একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা দেবে—এমন ইন্দো-প্যাসিফিক জোটের ধারণা ভেঙে পড়ছে। ফ্রেজিয়ারের মতে, চীনকে মোকাবিলায় ভারতের পক্ষ নেওয়ার কোনো উদ্দেশ্য যুক্তরাষ্ট্রের কখনোই ছিল না।
ফ্রাঙ্কফুর্টার অ্যালজেমেইনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নয়াদিল্লি-বেইজিং পুরোনো উত্তেজনা কমে আসছে। গত বছর চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে মোদির সাক্ষাতের পরে থেকে দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
চলতি সপ্তাহে মোদি তিয়ানজিনে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। বিষয়টি একটি প্রশ্ন সামনে এনেছে যে—ট্রাম্প ভারতকে চীনের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন কি না। ফ্রেজিয়ার বলেন, ভারতের চীনকে যতটা প্রয়োজন, চীনের ভারতকে ততটা প্রয়োজন নেই। ভারতের এ পরিবর্তন কৌশলগত, শুধু মার্কিন শুল্কের প্রতিক্রিয়া নয়। যুক্তরাষ্ট্র পিছু হটার কারণে বিশ্বব্যাপী প্রভাব এবং শিল্প প্রবৃদ্ধিতে ভারত ও চীনের স্বার্থ অভিন্ন। চীনের জন্য তার বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক অবস্থানকে বাড়ানোর ক্ষেত্রে ভারত খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সূত্রঃ ইন্ডিয়া টুডে
এম.কে
২৬ আগস্ট ২০২৫

আরো পড়ুন

সরকারি ডিভাইসে উইচ্যাট নিষিদ্ধের কথা ভাবছে অষ্ট্রেলিয়া

পুলিশের উপর জনগণের আস্থা ফেরাতে কাজ করছে সরকার

আবারও কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হওয়ার প্রস্তাব ট্রাম্পের