পুরাতন ফোন এবং ল্যাপটপের যন্ত্রাংশ থেকে স্বর্ণ ও মূল্যবান ধাতু বের করবে ব্রিটিশ মুদ্রা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান রয়্যাল মিন্ট। বৈদ্যুতিন বর্জ্য থেকে সোনা পুনর্ব্যবহারের জন্য যুক্তরাজ্যে বিশ্বের প্রথম প্রযুক্তি চালু করার পরিকল্পনা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বিবিসির খবরে বলা হয়, ইলেক্ট্রনিক বর্জ্যের মাত্র এক পঞ্চমাংশেরও কম পুনর্ব্যবহার হয়। তাই প্রযুক্তি বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এই উদ্যোগ প্রভাব রাখবে বলে জানিয়েছেন মিন্টের প্রধান নির্বাহী অ্যান জেসপ।
ডিভাইসের সার্কিট বোর্ড থেকে ৯৯% সোনা পুনরুদ্ধারের লখ্যে কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান এক্সসারের সঙ্গে চুক্তি করেছে রয়্যাল মিন্ট।
এদিকে পুরনো মোবাইল থেকে সোনা বার করে আনার পদ্ধতি নিয়ে ক’দিন ধরে ইন্টারনেটে বেশ কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, সংবাদ মাধ্যমগুলোতে লেখালেখিও হয়েছে।
বিদ্যুৎ সুপরিবাহী হওয়ায় মোবাইল ফোনে বহুল ব্যবহৃত হয় সোনা। মরিচা না ধরা এবং সহজে ক্ষয় না হওয়ার কারণে ফোনের ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট (আইসি) বোর্ডের ছোট্ট কানেক্টরগুলিতে সোনা ব্যবহৃত হয়। যদিও সে সোনার পরিমাণ সামান্যই। মোবাইল ফোন ছাড়াও কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপের আইসিতেও থাকে সোনা।
যুক্তরাজ্যের এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলেছেন, ইলেকট্রনিক বর্জ্য থেকে সোনার মতো দামি ধাতু বের করা জরুরী। এতে করে খনি থেকে সোনা উত্তোলন কমবে যা বাতাসে কার্বন ডাইঅক্সাইড বাড়িয়ে দেয়।
ওই গবেষণাতেই একটি সহজ পদ্ধতির কথা উল্লেখ করেন গবেষকরা। যে পদ্ধতিতে বাতিল ইলেক্ট্রনিক বর্জ্য থেকে সোনা সংগ্রহের ঝুঁকি বেশ কম। তাছাড়া ওই পদ্ধতিতে বছরে প্রায় ৩০০ টন সোনা সংগ্রহ করা হয়। তবে এই কাজ করার আগে রাবারের গ্লাভস, রাবারের অ্যাপ্রন, ভাল গগল্স ব্যবহার করা উচিত।
সোনা আলাদা করার জন্য গবেষকরা একটি যৌগ তৈরি করেছেন। ওই যৌগ নিয়ে কাজ করতে গেলে সতর্ক হওয়া উচিত। কারণ তাতে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড, মিউরিয়াটিক অ্যাসিড, মিথাইল হাইড্রেটের মতো রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় বলে জানা গিয়েছে।
বাতিল টিভি, ল্যাপটপ, কম্পিউটার কিংবা মোবাইল ফোনের সার্কিট বোর্ডে সোনা-রূপাসহ নানা ধাতু থাকে। প্রথমে গবেষকদের তৈরি তরল যৌগের মধ্যে সার্কিট বোর্ডটি ভিজিয়ে রাখতে হবে। তাতে সব ধাতু বোর্ডটি থেকে আলাদা হয়ে যাবে। পরে আরেকটি তরল ব্যবহার করে আলাদা করতে হয় সোনা।
২১ অক্টোবর ২০২১
এনএইচ