যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক আজ সোমবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যুক্তরাজ্যে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডা পাঠানোর ফ্লাইট ১০ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে শুরু হবে। প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য পার্লামেন্টে পাঠানো হয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।
ডাউনিং স্ট্রিটে আজ এক সংবাদ সম্মেলনে বিতর্কিত রুয়ান্ডা বিল প্রসঙ্গে ঋষি সুনাক বলেন, ‘আর কোনো যদি এবং কিন্তু নেই, ফ্লাইটগুলো রুয়ান্ডায় যাচ্ছে। আমরা প্রস্তুত, ফ্লাইটগুলো পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।’
ঋষি সুনাক আরও বলেন, রেকর্ডসংখ্যক অভিবাসন প্রত্যাশীর ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ছোট নৌকায় করে ফ্রান্স থেকে ইংল্যান্ডে আসা প্রতিহত করা এখন অপরিহার্য। ঋষি সুনাক ইস্যুটিকে ভোটারদের কাছে কনজারভেটিভ পার্টির মূল অ্যাজেন্ডায় পরিণত করেছেন।
সুনাক বলেছেন, দুটি চেম্বারের মধ্যে বেশ কয়েক সপ্তাহের বিতর্কের পর পার্লামেন্টে আজ বিলটি পাস করে আইনে পরিণত করা হবে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে।, আর কোনো ঝামেলা নয়। আর দেরি করা হবে না।’ তিনি জানান, গ্রীষ্মের একাধিক ফ্লাইটের পরিকল্পনা রয়েছে।
যুক্তরাজ্যে এ বছরের শেষ দিকে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর কঠোর অভিবাসন নীতি প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কনজারভেটিভ পার্টি। ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকার পর আগামী পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির কাছে ক্ষমতাসীনদের পরাজয় ঘটবে বলে অনেকেরই ধারণা।
তবে ইস্যুটি নিয়ে কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব রয়েছে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে। এর আগে ২০২২ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বরিস জনসন প্রথম প্রস্তাবটি তুলেছিলেন। এখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের কোনো অভিবাসন প্রত্যাশীকে রুয়ান্ডায় পাঠানো হয়নি।
গত বছর বিলটির প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল, রুয়ান্ডায় অভিবাসী পাঠানো আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ। তবে দমে যাননি ঋষি সুনাক। আশ্রয়প্রার্থীদের আফ্রিকার দেশটিতে পাঠাতে নতুন বিল নিয়ে পার্লামেন্টে গেছেন তিনি। নিজ দলের রক্ষণশীল আইন প্রণেতাদের বাধার মুখে পড়েও শেষ পর্যন্ত হাউস অব কমন্সে পাস হয়েছে বিলটি।
নতুন বিলটি পূর্ব আফ্রিকান দেশটিকে একটি নিরাপদ দেশ হিসেবে বিবেচনা করতে বিচারকদের বাধ্য করবে এবং মন্ত্রীদের আন্তর্জাতিক ও ব্রিটিশ মানবাধিকার আইনের বিভাগগুলোকে উপেক্ষা করারও ক্ষমতা দেবে।
যুক্তরাজ্য সরকার বলেছে, আজ বিকেলে নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের নির্বাচিত সদস্যরা বিলটি অনুমোদন করলে উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসের অনির্বাচিত সদস্যদের চাওয়া দুটি সংশোধনী মেনে নেওয়া হবে না।
একটি সংশোধনীতে বলা হয়েছে, বিদেশে যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে কাজ করেছেন এমন লোকদের নির্বাসন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।
আরেক সংশোধনীতে বলা হয়েছে, রুয়ান্ডা আসলেই নিরাপদ কি না তা নির্ধারণ করার জন্য একটি স্বাধীন পর্যবেক্ষক কমিটি গঠন করা হোক।
তবে হাউস অব লর্ডস পরাজিত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, তারা অনির্বাচিত এবং তাদের ভূমিকা মূলত আইনের যাচাই-বাছাই এবং সংশোধনী প্রস্তাব আনা।
সূত্রঃ এএফপি
এম.কে
২৩ এপ্রিল ২০২৪