ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে আসা অভিবাসীদের রুয়ান্ডায় পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল ব্রিটিশ সরকারের৷ এই পরিকল্পনা থমকে গেছে আদালতের সিদ্ধান্তে৷ কিন্তু ব্রিটিশ সরকার এরই মধ্যে রুয়ান্ডাকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা প্রদান করে ফেলেছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়৷
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এই ইস্যুতে পার্লামেন্টে ব্যাপক চাপের মুখে পড়েছেন৷ এর আগে সুনাকের সরকার জানিয়েছিল, ২০২২ সালের এপ্রিলে হওয়া এই পরিকল্পনার আওতায় রুয়ান্ডাকে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে।
কিন্তু তথ্যমতে অর্থের পরিমাণ এর দেড়গুণেরও বেশি। আদালতে সরকারের এই পরিকল্পনা চ্যালেঞ্জ করা হয়৷ কোনো অভিবাসীকেই যুক্তরাজ্য থেকে রুয়ান্ডায় পাঠানো সম্ভব হয়নি৷ গত মাসে ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট এই পরিকল্পনাকে বেআইনি ঘোষণা করে রায় দিয়েছে৷
আদালত বলেছে, এই নীতির আইনগত ভিত্তি নেই, কারণ রুয়ান্ডা দেশ হিসাবে নিরাপদ নয়।ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশটি রুয়ান্ডাকে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড, অর্থাৎ প্রায় এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা দিয়েছে৷
চুক্তির আওতায় আগামী এক বছরের মধ্যে আরো প্রায় ৫০ মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ৭০০ কোটি টাকা) দেয়ার কথা রয়েছে। কনিষ্ঠ অভিবাসন মন্ত্রী টম পার্সগ্লাভ অবশ্য সরকারের এই অর্থ বরাদ্দের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন৷ তার মতে, এই অর্থ ‘‘আমাদের অংশীদারত্ব কার্যকর করে তুলতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরিতে সহায়তা করবে।’’
অন্যদিকে, বিরোধী লিবারেল ডেমোক্র্যাট দল এই ঘটনাকে ‘‘করদাতাদের অর্থের ক্ষমার অযোগ্য অপচয়’’ উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। অভিবাসীদের ছোট নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ফ্রান্স থেকে ইংল্যান্ডে পৌঁছানোর চেষ্টা করা থেকে বিরত রাখার জন্য যুক্তরাজ্য সরকার রুয়ান্ডা পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
এ বছর নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে প্রায় ২৯ হাজার লোক ইংল্যান্ডে এসেছেন৷ ২০২২ সালে এ সংখ্যা ছিল প্রায় ৪৬ হাজার। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর, ব্রিটেন এবং রুয়ান্ডা অভিবাসীদের সুরক্ষা জোরদার করার অঙ্গীকার করে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে৷ সুনাকের সরকার যুক্তি দিয়েছে এই চুক্তির ফলে রুয়ান্ডাকে একটি নিরাপদ গন্তব্য ঘোষণা করে একটি আইন পাস করার সুযোগ তৈরি হবে৷
এম.কে
১২ ডিসেম্বর ২০২৩