অভিবাসন বিষয়ে ইটালির কৃষিমন্ত্রী ফ্রানসেস্কো ললোব্রিগিদার এক বক্তব্যের চরম সমালোচনা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘জাতিগত প্রতিস্থাপন’-এর ধারণা বাতিল করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এই মন্ত্রী রোমে কংগ্রেসকে বলেন, “আমাদের জাতিগত প্রতিস্থাপন অর্থাৎ ইটালিয়ানদের সন্তান কম, তাই অন্যদের সন্তান দিয়ে সে জায়গা পূরণ করতে হবে- এমন ধারণা থেকে সরে আসতে হবে। এটা আমাদের ভবিষ্যৎ হতে পারে না।”
গত নির্বাচনে মেলোনির দক্ষিণপন্থি ব্রাদার্স অফ ইটালি পার্টির প্রতিশ্রুতি ছিল, তারা দেশটির পড়তি জন্মহার বাড়াবে এবং সমুদ্র পথে অনিয়মিত অভিবাসীদের আগমন কমাবে। তবে এ বছর এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৩ হাজার অভিবাসী ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইটালিতে এসেছেন। সে তুলনায় গত বছর এসেছেন প্রায় সাড়ে আট হাজার। এ অবস্থায় গত সপ্তাহে ছয় মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে মেলোনির জোট সরকার।
ললোব্রিগিদা শুধু মেলোনির পার্টির একজন জ্যেষ্ঠ সদস্যই নন, তিনি তার আত্মীয়ও। তার মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করছে বিরোধী দলগুলো।
মধ্যবামপন্থি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা এলি শ্লাইন তার বক্তব্যকে ‘বিরক্তিকর’ বলে উল্লেখ করেছেন। ললোব্রিগিদার কথায় ‘শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদ’-এর গন্ধ পাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মেলোনির জোটে মাতেও সালভিনির লীগ পার্টির মত অতিডানপন্থি দলও আছে। সমালোচকদের অভিযোগ, এই জোট ইটালিতে অভিবাসনবিরোধী মতকে উস্কে দিচ্ছে। সরকার মানবাধিকার অবদমন করছে বলে বার বার অভিযোগ করছেন বামপন্থিরা।
এর আগে ব্রাদার্স অব ইটালি পার্টির আরেক সদস্য সেনেট স্পিকার ইগনাৎসিও লা রুসার আরেকটি বক্তব্যকে ঘিরেও সমালোচনা হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি বলেন, তার ছেলে যদি সমকামী হয় তাহলে তিনি খুব ব্যথিত হবেন।
অভিবাসন নিয়ে সরকার ও বিরোধীপক্ষের এসব পক্ষে বিপক্ষে বক্তব্যের মাঝেই অভিবাসীদের ‘বিশেষ সুরক্ষা’ আইন নিয়ে বিতর্কটি পিছিয়েছে ইটালির সেনেট।
জোট সরকার এই আইনটি বাতিল করতে চায় অথবা এই আইনের প্রয়োগ একেবারে সীমিত করতে চায়। বিশেষ সুরক্ষার এই আইন অনুযায়ী, অনিয়মিত পথে আসা অভিবাসীদের যাদের আশ্রয়ের আবেদন বাতিল হয়েছে, তারা দুই বছর ইটালিতে থাকতে ও কাজ করতে পারবেন।