আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যুক্তরাজ্য ওয়াচডগ প্রতিষ্ঠানের নিকট অভিযোগ যাওয়ার হার রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস মিলিয়ে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিকট হতে ৩,১৩৭ টি অভিযোগ গ্রহণ করেছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট অ্যাডজুডিকেটরের কার্যালয়। যা এর আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা জানায় তারা দেশীয় শিক্ষার্থীদের তুলনায় উচ্চতর টিউশন ফি প্রদান করছে। এই বিষয় নিয়ে তারা ২০২৩ সালে যুক্তরাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সম্পর্কে ১,২৬৮টি অভিযোগ করে- যা এখন পর্যন্ত ” সর্বোচ্চ স্তর”।
ওআইএ জানিয়েছে, নন-ইইউ শিক্ষার্থীদের নিকট হতে অভিযোগ প্রায় ৪৩ শতাংশ বেড়েছে। তথ্যমতে জানা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি জিসিসির শিক্ষার্থীদের দ্রুত ভিসা দেওয়ার কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ব্রিটিশ ইনস্টিটিউটগুলিতে আবেদন কারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সামগ্রিকভাবে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আসা প্রায় অর্ধেক অভিযোগের কারণ চিহ্নিত করেছে ওআইএ। যাদের মধ্যে চূড়ান্ত ডিগ্রি নিয়ে সমস্যা, ফলাফলের সমস্যা, একাডেমিক আপিল নিয়ে অভিযোগ ছিল উল্লেখযোগ্য। ২০২২ সালের পর হতে এই ধরনের অভিযোগ ৩৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ওয়াচডগ জানিয়েছে, একাডেমিক বিষয় সম্পর্কে অভিযোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় সে সকল বিষয়ের উপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে মনোনিবেশ বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
একাডেমিক আপিল সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অর্ধেকেরও বেশি অভিযোগ, যা স্থানীয় শিক্ষার্থীদের তুলনায় অনেক বেশি। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অনেকে ইঙ্গিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্থানীয় শিক্ষার্থী ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে পার্থক্য করা হয় ফলাফল প্রদানের ক্ষেত্রে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রায়শই যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করার জন্য যথেষ্ট ব্যক্তিগত এবং আর্থিক বিনিয়োগ জড়িত থাকে। কখনও কখনও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের স্পনসরশিপের ব্যবস্থা করতে হয়, যার ফলে তাদের পড়াশোনায় ফলাফল আনতে বিশাল চাপে থাকতে হয়।
তাছাড়া আরো একটি সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে যা হল ভিসা বিধিনিষেধ। এই বিষয় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের তাদের পরিবার আনতে বাঁধা প্রদান করছে। যা তাদের মানসিক শান্তি প্রাপ্তিতেও বাঁধা দিচ্ছে।
ওআইএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০২৩ সাল উচ্চশিক্ষার খাতে “আরও একটি জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং বছর” ছিল। শিক্ষার্থীদের উপর ক্রমবর্ধমান তীব্র আর্থিক চাপ, জীবনযাত্রার অব্যাহত উচ্চ ব্যয়, আবাসন সংক্রান্ত সমস্যা এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের উপর নানা নতুন নতুন বিধিনিষেধ উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
উল্লেখ্য যে, বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ জানিয়েছে তারা ওয়াচডগের কাছে দেয়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ও ওআইএর কর্তৃক প্রতিবেদন গ্রহণ করবে। বিশ্ববিদ্যালয় এই সকল বিষয়ের উপর কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে যাবে যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থী তাদের প্রাপ্য শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় হতে গ্রহণ করতে পারে।”
সূত্রঃ ন্যাশনাল নিউজ
এম.কে
১৮ মে ২০২৪