গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের নয় মাস পর দেশ ছাড়লেন সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ব্যাংককের উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন ছেলে ও শ্যালক। পুলিশ বিশেষ শাখা (এসবি) এবং ইমিগ্রেশন বিভাগ নিশ্চিত করেছে, তার দেশত্যাগে কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না।
তবে হত্যাকাণ্ডের মামলার আসামি হয়েও কীভাবে তিনি নির্ভারভাবে দেশ ছাড়লেন, তা নিয়ে উঠেছে ব্যাপক সমালোচনা। অনেকে বলছেন, সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রত্যক্ষ সম্মতিতেই সাবেক এই রাষ্ট্রপতির বিদেশ যাত্রা সম্পন্ন হয়—যা এখন “শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা” হিসেবেই দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, হামিদ ভিআইপি টার্মিনাল ব্যবহার করে প্রায় চার ঘণ্টা অবস্থানের পর ইমিগ্রেশন পার হন। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তৈরি একটি গোপন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তার দেশত্যাগের বিষয়ে অন্তত তিনটি সংস্থার কর্মকর্তা ও ঊর্ধ্বতন মহল অবগত ছিলেন এবং অনুমতি দিয়েছিলেন।
এদিকে আবদুল হামিদের পাসপোর্ট ব্যবহার নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কূটনৈতিক পাসপোর্ট সমর্পণ করে তিনি সাধারণ (সবুজ) পাসপোর্টে দেশ ত্যাগ করেন।
সামাজিকমাধ্যমে এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতারা। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়ে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ। ইনকিলাব মঞ্চ দাবি জানিয়েছে ‘ছাত্র-উপদেষ্টা’দের অপসারণের।
এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিনাকী ভট্টাচার্য দাবি করেন, হামিদকে দেশ ছাড়ার সুযোগ দেয় ‘ডিপ স্টেট’-এর একটি অংশ, যার উদ্দেশ্য ছিল ‘পরিশুদ্ধ আওয়ামী লীগ’ গঠন। কিন্তু আরেকটি অংশ সেই পরিকল্পনা বানচাল করে দেয়। তার ভাষায়, আইভির গ্রেফতার আর হামিদের দেশত্যাগ একই সুতোয় বাঁধা — “পরিশুদ্ধ আওয়ামী লীগের কফিনে শেষ পেরেক”।
সবমিলিয়ে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বচ্ছতা, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলোর ক্ষমতার দৌড়ঝাঁপ নিয়ে দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক।
সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া
এম.কে
০৯ মে ২০২৫