ফরাসি শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনে প্রায় ৩০০ ছাত্রী মুসলিম পোশাক আবায়া পরে তাদের স্কুলে গিয়েছিল। গত সপ্তাহে স্কুলগুলোতে এ ধরনের পোশাকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল দেশটি।
মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পোশাক নিয়ে নতুন নির্দেশনা জারির পর বেশির ভাগ ফরাসি শিক্ষার্থী তা মেনে নিয়েছে। তবে অফিশিয়াল পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞার পরও দেশের বিভিন্ন স্কুলে সোমবার ২৯৮ মুসলিম ছাত্রী আবায়া পরে উপস্থিত হয়েছিল। এসব ছাত্রীর বেশির ভাগই ১৫ কিংবা তার চেয়ে বেশি বয়সের।
দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুসারে স্কুল কর্তৃপক্ষ যারা আবায়া পরে স্কুলে এসেছিল তাদেরকে তা খুলে ফেলতে বলে। এ ক্ষেত্রে বেশির ভাগ ছাত্রী এই নির্দেশ মান্য করলেও তা মানতে অস্বীকৃতি জানায় অন্তত ৬৭ জন। পরে তাদেরকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
এ অবস্থায় যেসব ছাত্রী ধর্মীয় পোশাক ছাড়তে রাজি হয়নি, এবার তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলবে কর্তৃপক্ষ। এই সংলাপও যদি ব্যর্থ হয় তবে তাদেরকে স্কুল থেকেই বাদ দেওয়া হবে।
জানা গেছে, গত সোমবার থেকে ফ্রান্সে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়েছে। দেশটির স্কুল পর্যায়ে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থা বজায় রাখার নির্দেশনাটি ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়েছে।
তবে এই নির্দেশনার বিপরীতে মুসলিমদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি গোষ্ঠীর আইনি চ্যালেঞ্জ আজ মঙ্গলবার দেশটির আদালতে উঠতে পারে।
আগস্টের শেষ দিকে ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, ৪ সেপ্টেম্বর নতুন স্কুল বছরের শুরুতে দেশের সরকারি স্কুলগুলোতে মুসলিম ছাত্রীরা ঢিলেঢালা ও পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ধর্মীয় পোশাক পরতে পারবে না।
ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় স্কুল এবং সরকারি ভবনগুলোয় ধর্মীয় চিহ্ন ব্যবহারের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ অবস্থায় স্কুলে ধর্মীয় পোশাক পরে গেলে তা দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ আইনকে লঙ্ঘন করে।
এর আগে দেশটির সরকারি স্কুলগুলোতে ২০০৪ সাল থেকেই মাথায় স্কার্ফ বা হিজাব পরা নিষিদ্ধ করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শুধু তাই নয়, ২০১০ সালে জনসমক্ষে পুরো মুখ ঢেকে রাখা বোরকা পরাও নিষিদ্ধ করেছিল ফরাসি কর্তৃপক্ষ।
এম.কে
০৬ আগস্ট ২০২৩