TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

আয়ারল্যান্ডে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য কঠোর নিয়মঃ কাজ করলে আবাসন খরচ বহন বাধ্যতামূলক

আয়ারল্যান্ড সরকার আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য বিদ্যমান সহায়তা কাঠামোতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। বুধবার ডাবলিনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে যারা কাজ করেন, এমন আশ্রয়প্রার্থীদের রাষ্ট্রীয় আবাসনের খরচের একটি অংশ বহন করতে হবে। একইসঙ্গে পরিবার পুনর্মিলন নীতি কঠোর করা এবং নাগরিকত্বের জন্য বসবাসের শর্ত তিন বছর থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা আয়ারল্যান্ডে ইতিহাসের তুলনায় সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই চাপ মোকাবিলায় বিচারমন্ত্রী জিম ও’ক্যালাহান এবং মাইগ্রেশন বিষয়ক জুনিয়র মন্ত্রী কোলম ব্রফি নতুন নীতিগুলো সামনে এনেছেন। মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রকাশ করা হবে।

প্রস্তাব অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় আবাসনে থাকা কর্মরত আশ্রয়প্রার্থীরা সাপ্তাহিক আয়ের ভিত্তিতে €15 (£13) থেকে €238 (£208) পর্যন্ত চার্জ দেবেন। যাদের সাপ্তাহিক আয় €97.01 থেকে €150, তাদের থেকে €15 নেওয়া হবে। অন্যদিকে, যাদের আয় €600-এর বেশি, তাদের সাপ্তাহিক চার্জ সর্বোচ্চ €238 পর্যন্ত হতে পারে।

চার্জ পরিশোধ না করলে আশ্রয়প্রার্থীরা আইনি জটিলতায় পড়তে পারেন। উল্লেখযোগ্য বকেয়া জমলে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে পদক্ষেপ নেওয়া ও ঋণ আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অর্থ আদায়ের উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষমতা থাকবে কর্তৃপক্ষের হাতে।

আইরিশ উপপ্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস এই নীতিকে “সাধারণ জ্ঞানভিত্তিক সিদ্ধান্ত” বলে অভিহিত করেছেন। তার মতে, একজন ব্যক্তি যদি আয়ের উৎস রাখেন, তাহলে তার সামর্থ্য অনুযায়ী আবাসন ব্যয় বহন করা যুক্তিসংগত।

তবে প্রস্তাবটি নিয়ে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। লেবার পার্টির সংসদ সদস্য গেড ন্যাশ অভিযোগ তুলেছেন যে, মন্ত্রী ও’ক্যালাহান অভিবাসন ইস্যুকে রাজনৈতিক সংকেত দেওয়ার (virtue signalling) জন্য ব্যবহার করছেন।
সিন ফেইন দল কিছুটা ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে। দলের সংসদ সদস্য ম্যাট কার্থি বলেছেন, কর্মরত আশ্রয়প্রার্থীদের সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যয় বহন করা “ন্যায্য”—তবে এটি যেন মানবিক বিবেচনাকে উপেক্ষা না করে সেই সতর্কতাও দিয়েছেন।

আয়ারল্যান্ড সরকারের নতুন পদক্ষেপ আশ্রয়প্রার্থী সহায়তা ও অভিবাসন ব্যবস্থাকে আরও কঠোর এবং আয়ভিত্তিক করতে যাচ্ছে—যা দেশটির রাজনৈতিক ও মানবাধিকার মহলে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে।

সূত্রঃ বিবিসি

এম.কে

আরো পড়ুন

মৌসুমি শ্রমিক সংকটে যুক্তরাজ্য

চার্লসের রাজ্যাভিষেকে আসবেন প্রিন্স হ্যারি

যুক্তরাজ্যের অভিবাসন পরিকল্পনা ঘিরে চ্যালেঞ্জের পাহাড়