10.9 C
London
October 5, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

আশ্রয় ও মানবাধিকার আইনে বড় পরিবর্তনের ঘোষণা দিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টার্মার

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টার্মার আশ্রয় ও নির্বাসন নীতিতে বড় পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থীরা খারাপ কারাগার বা দুর্বল স্বাস্থ্যসেবার অজুহাত দেখিয়ে আর নির্বাসন এড়াতে পারবে না।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্টার্মার বলেন, তিনি মানবাধিকার আইন ধ্বংস করতে চান না, তবে ইউরোপীয় কনভেনশন অন হিউম্যান রাইটস (ECHR)-এর ৩ নম্বর অনুচ্ছেদ নতুনভাবে বিবেচনা করা দরকার। এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কাউকে নির্যাতন বা অমানবিক আচরণের আশঙ্কা রয়েছে এমন দেশে পাঠানো যাবে না।

স্টার্মারের দাবি, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে “অভূতপূর্ব মাত্রায়” অভিবাসন বেড়েছে এবং আইনকে বর্তমান বাস্তবতার সাথে মানানসই করতে হবে। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, যারা সত্যিকার অর্থে নির্যাতন থেকে পালিয়ে এসেছে, তাদের আশ্রয় দেওয়া অব্যাহত থাকবে।

রেডিও ৪–এর এক আলোচনায় স্টার্মার বলেন, কাউকে সরাসরি মৃত্যুদণ্ডের মুখে পাঠানো আর ভিন্ন মাত্রার কারাগার বা স্বাস্থ্যসেবা থাকা দেশে ফেরত পাঠানো এক বিষয় নয়। তিনি উদাহরণ দেন, একজন ব্রাজিলিয়ান অপরাধীর নির্বাসন স্থগিত হয়েছিল এই যুক্তিতে যে ব্রাজিলের কারাগার যুক্তরাজ্যের তুলনায় খারাপ।

তার মতে, শুধু ECHR–এর ৩ ও ৮ নম্বর অনুচ্ছেদই নয় (যেখানে নির্যাতন নিষিদ্ধ এবং ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের অধিকার সুরক্ষিত), বরং জাতিসংঘের Refugee Convention, Torture Convention ও Child Rights Convention–ও নির্বাসনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

মানবাধিকার আইনজীবী শামি চক্রবর্তী এ নিয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, আদালত খুবই বিরল ক্ষেত্রে নির্বাসন স্থগিত করে এবং সাধারণত এগুলো হয় অমানবিক আচরণের প্রকৃত ঝুঁকি থাকলে।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে স্টার্মার লেবার পার্টি সম্মেলনে বিরোধী দল রিফর্ম ইউকে ও নাইজেল ফারাজের সমালোচনার মুখে পড়েন। তিনি ফারাজের রাজনীতিকে “অভিযোগের রাজনীতি” আখ্যা দিয়ে লেবার পার্টিকে “সহনশীল ও ভদ্র দেশপ্রেমের দল” হিসেবে তুলে ধরেন।

স্টার্মার আরও বলেন, ছোট নৌকায় করে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়া শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। ব্রেক্সিটের আগে ডাবলিন রেগুলেশন থাকায় যুক্তরাজ্য ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থীদের অন্য ইউরোপীয় দেশে ফেরত পাঠাতে পারত, কিন্তু ২০২১ সালের জানুয়ারির পর সেই সুযোগ নেই।

অভিবাসন নীতি ছাড়াও স্টার্মার আরও কিছু প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি তরুণদের মানসিক সমস্যাজনিত বেকারত্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন, শক্তির মূল্য কমানো, পরিবার ও ব্যবসায়িক ব্যয় হ্রাস, খাদ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ইইউ–যুক্তরাজ্য নতুন SPS চুক্তি বাস্তবায়নের কথা জানান। পাশাপাশি তিনি ঘোষণা দেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার পাশাপাশি “গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড” কারিগরি প্রশিক্ষণ ও ডিগ্রি–লেভেলের অ্যাপ্রেন্টিসশিপ সমান মর্যাদা পাবে।

স্টার্মার জোর দিয়ে বলেন:
“যারা সত্যিই নির্যাতন থেকে পালিয়ে আসছে, তাদের আশ্রয় দেওয়া মানবিকতার কাজ।”

সূত্রঃ বিবিসি

এম.কে
০১ অক্টোবর ২০২৫

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যের স্টুডেন্ট ভিসায় নতুন সুযোগ-সুবিধা

মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমসিম খাচ্ছে কনজারভেটিভ সরকার

স্কিলড ওয়ার্কার ভিসা বিধি, দেশ থেকে বহিষ্কার এবং ফি বৃদ্ধিঃ ইমিগ্রেশন হোয়াইট পেপারে কী রয়েছে