5 C
London
December 29, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

ইংল্যান্ডে বিশ্ববিদ্যালয় টিউশন ফি বাড়বে, তবে কেবল মানসম্মত প্রতিষ্ঠানের জন্য

ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন থেকে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে টিউশন ফি বাড়াতে পারবে, তবে কেবলমাত্র তারা যেসব প্রতিষ্ঠান “কঠোর নতুন মানদণ্ড” পূরণ করবে। সোমবার সংসদে এই ঘোষণা দেন দেশটির শিক্ষা সচিব ব্রিজেট ফিলিপসন। সরকার বলছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা খাতকে আর্থিকভাবে আরও শক্ত ভিত্তি দেওয়া হবে।

আগামী বছরের সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া দুই শিক্ষাবর্ষে সব বিশ্ববিদ্যালয়ই ফি বৃদ্ধির সুবিধা পাবে। এরপর প্রতি বছর টিউশন ফি’র সর্বোচ্চ সীমা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাড়ানোর আইনি ব্যবস্থা করা হবে, কিন্তু সেই বৃদ্ধি নির্ভর করবে শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের যত্নের মান এবং শিক্ষার ফলাফলের ওপর।

ব্রিজেট ফিলিপসন সংসদে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি সর্বোচ্চ ফি নিতে চায়, তবে তাদের বিশ্বমানের শিক্ষা দিতে হবে। শিক্ষার্থীরা তাদের অর্থের যথাযথ মূল্য পাওয়ার অধিকার রাখে।”
তিনি সতর্ক করে দেন, যে সব প্রতিষ্ঠান মান বজায় রাখতে ব্যর্থ হবে, তাদের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাড়তি ফি নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না এবং প্রয়োজনে আর্থিক ও নিয়ন্ত্রক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ইংল্যান্ডে এ বছরই টিউশন ফি আট বছর পর প্রথমবারের মতো বেড়ে প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য বছরে £৯,৫৩৫-এ পৌঁছেছে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। কিন্তু ‘অফিস ফর স্টুডেন্টস’-এর হিসাবে ৪৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ঘাটতিতে রয়েছে, যা সরকারকে নতুন আর্থিক কাঠামো বিবেচনায় আনতে বাধ্য করেছে।

শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রার ব্যয় সামলাতে মেইনটেন্যান্স লোন প্রতি বছর স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৃদ্ধি পাবে, বিশেষত নিম্ন আয়ের পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য বড় অঙ্কের সহায়তা দেওয়া হবে।
এছাড়া সরকার ঘোষণা দিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ফ্র্যাঞ্চাইজিং কার্যক্রমেও কঠোর নিয়ন্ত্রণ আনা হবে, যাতে কোনো বেসরকারি সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স পরিচালনা করে সরকারি অর্থের অপব্যবহার করতে না পারে।

ইউনিভার্সিটিজ ইউকের প্রধান নির্বাহী ভিভিয়েন স্টার্ন বলেন, “আজকের হোয়াইট পেপার আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থাকে নতুন দিশা দিয়েছে। এটি প্রমাণ করে যে, ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একটি জাতীয় সম্পদ, যা বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত।”

হোয়াইট পেপারে শিক্ষাব্যবস্থায় আরও বড় পরিবর্তনের অংশ হিসেবে নতুন পেশাভিত্তিক যোগ্যতা “V-লেভেল” চালুর পরিকল্পনাও ঘোষণা করা হয়েছে। এটি এ-লেভেল ও টি-লেভেলের পাশাপাশি চালু হবে এবং বর্তমানে চালু থাকা প্রায় ৯০০টি বৃত্তিমূলক কোর্স—যেমন BTEC—ধীরে ধীরে প্রতিস্থাপিত হবে।

সরকার বলছে, এর লক্ষ্য হলো পোস্ট-১৬ শিক্ষার কাঠামোকে সহজ করা। তবে শিক্ষাবিদদের আশঙ্কা, দীর্ঘদিনের জনপ্রিয় BTEC বাতিল হলে অনেক শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ওয়েস্টমিনস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার আরউইন বলেন, “সরকার ঠিকই বলেছে, ফার্দার এডুকেশন সামাজিক অগ্রগতির মূল চালিকা শক্তি। কিন্তু এই পরিবর্তন তরুণদের কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণের ঘাটতি সমাধানে তেমন কিছু করবে না।”

এছাড়া, সরকার ঘোষণা দিয়েছে যে ইংরেজি ও গণিতের জিসিএসই (GCSE) পুনঃপরীক্ষায় বারবার ব্যর্থ হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন “স্টেপিং স্টোন” যোগ্যতা চালু করা হবে, যাতে তারা ভবিষ্যতে পুনঃপরীক্ষার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুত হতে পারে।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
২১ অক্টোবর ২০২৫

আরো পড়ুন

সন্তানদের খাবার জোগাতে কর্মক্ষেত্রে না খেয়ে থাকছেন এনএইচএস নার্স!

লেবার পার্টির ওপর ক্রমশ চাপ বাড়াচ্ছে রিফর্ম ইউকে

‘ব্রিটিশ সরকারের ভুল নীতির কারণে ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু’