ছয় মাসের মধ্যে মহিলাদের সাথে বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত হওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে ১৫০০ বা তার বেশি পুলিশ অফিসার বা প্রশাসনের কর্মীদের মধ্যে মাত্র ১% কে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে বৃটিশ গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়। নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা মোকাবেলায় পুলিশের দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন মহল।
জাতীয় পুলিশ কাউন্সিলের (এনপিসি) তথ্য থেকে দেখা যায় যে ইংল্যান্ডের ৬৭৬৭ জন কর্মকর্তা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে জনসাধারণের দ্বারা ৫২৪ টি নারী সহিংসতা ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়েছিল যার মধ্যে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস পুলিশ বাহিনীর কর্মীদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
খবরে জানা যায়, পুরাতন মামলা হতে মাত্র ২৯০ টি মামলার সমাধান করা হয়েছে, বাকি মামলাগুলোতে আর কোনও পদক্ষেপ না নিয়েই শেষ হয়েছে এবং কোনও কর্মকর্তা বা কর্মীকে বরখাস্তও করা হয়নি।
আরও ৬৭২ পুলিশ অফিসার বা কর্মীদের বিরুদ্ধে নারী ও মেয়েদের উপর সহিংস আচরণের অভিযোগ আনা হয়েছিল গত বছরের শেষভাগে। সেইসব অভিযোগের ভিত্তিতে কেবল ১৩ জন কর্মকর্তা এবং কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
পুলিশ অফিসার ডেভিড ক্যারিক এবং ওয়েন কুইজেন্সের হাই প্রোফাইল মামলার রায়ের পরে এই পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়।
ডেভিড ক্যারিককে গত মাসে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়ন সহ কয়েক ডজন অপরাধের জন্য জেল দেওয়া হয়েছিল।
২০২১ সালে কুইজেন্স সারা এভারার্ডকে হত্যা করেছিল। তখন থেকেই পুলিশের উপর সাধারণ জনগণের আস্থার সংকট দেখা দেয়।
ঘরোয়া সহিংসতার শিকাররা বৃটিশ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তারা পুলিশের প্রতি আস্থা হারিয়েছেন।
রেচেল উইলিয়ামস, যিনি তার স্বামীর দ্বারা সহিংসতার শিকার তিনি বর্তমানে সহিংসতার শিকার মহিলাদের আইনত সাহায্য করে থাকেন। তিনি বলেন, “গত কয়েক বছর ধরে যা ঘটেছে তার কারণে লোকেরা পুলিশের উপর আস্থা হারিয়েছে। তারা অভিযোগ প্রদান করতেও ভয় পায় কারণ তারা মনে করে প্রশাসনের লোক হওয়ায় তাদের উপর কোন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।”
ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য করতে এবং তাদের অভিযোগ প্রদানে উৎসাহ দিতে লিসেস্টারশায়ার পুলিশ কাজ করছে বলে জানান ক্রিস বেকার। লিসেস্টারশায়ারে ইতিমধ্যে একটি যৌন নির্যাতিতদের সাহায্যের জন্য রেফারেল সেন্টারের কাজ শুরু করেছে। গোয়েন্দা সুপারিন্টেন্ডেন্ট ক্রিস বেকার লিসেস্টারশায়ার পুলিশে নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা মোকাবেলায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, “মহিলা পুলিশ অফিসার এবং কর্মীদের কোনও ধরণের হয়রানি বা যৌনসংহিতার শিকার হচ্ছে কিনা তা খুঁজে দেখবে তার বিভাগ। নারী ও মেয়েদের প্রতি খারাপ মনোভাবের লোকেদের পুলিশিংয়ে কোনও জায়গা নেই।”
নারী ও মেয়েদের সহিংসতার বিরুদ্ধে এনপিসিসি কো-অর্ডিনেটর ডেপুটি চিফ কনস্টেবল ম্যাগি ব্লিথ বলেছেন, “আমরা স্বীকৃতি দিয়েছি যে সারা দেশে নারী ও মেয়েদের আস্থা সত্যই সত্যই ভেঙে গেছে। তবে এই আস্থা পুনরুদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে এবং অবশ্যই পুনর্নির্মাণ সম্ভব। আমরা দেখাতে চাই যে নারীদের উপর যারা সহিংস তেমন লোকদের পুলিশ বিভাগের মধ্যে কাজ করা উচিত নয়, এমন লোকদের অপসারণের জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।”
এম.কে
১৪ মার্চ ২০২৩