বিদেশি ছাত্র যারা হামাসের পক্ষে অবস্থান নিয়ে স্যোশাল মিডিয়ায় কিংবা মিছিলে অংশগ্রহণ করে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য সরকার। ব্রিটিশ হোম অফিস তাদের যুক্তরাজ্য হতে বের করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে জানায় হোম অফিসের একজন মুখপাত্র।
ইমিগ্রেশন মন্ত্রী রবার্ট জেনরিক তার বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চেয়েছেন সন্ত্রাসবাদে পক্ষে বিদেশি শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয়ায় কিভাবে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া যায়। ঘৃণ্য অপরাধ বা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর পক্ষে সমর্থন প্রকাশ করায় ন্যাশনাল সিকিউরিটির কথা চিন্তা করে ব্যবস্থা নেয়ার পদ্ধতি বের করার জন্য মন্ত্রী হোম অফিসকে চাপ দিয়েছেন। বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করে তাদের নিজ দেশে প্রেরণ করার কথা জানিয়েছে ইমিগ্রেশন বিভাগের কর্মকর্তারা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, বর্তমান প্রেক্ষাপটে অসংখ্য বিদেশি শিক্ষার্থীরা ব্রিটিশ আইনে নিষিদ্ধ হামাসের দ্বারা ইসরায়েলের উপর সন্ত্রাসবাদী হামলার পক্ষে সমর্থন প্রকাশ করেছে।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গেরাল্ড ডারমানিন ইতিমধ্যে যে সমস্ত বিদেশিরা ফ্রান্সে সেমিটিক বিরোধী অবস্থান নিয়েছেন তাদের ফ্রান্স থেকে বের করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরমধ্যে তিনজন অভিযুক্তকে ফ্রান্স থেকে বের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম।
বর্তমানে যুক্তরাজ্যের আইন অনুযায়ী ব্রিটিশ ন্যাশনাল সিকিউরিটির বিরুদ্ধে কেউ অবস্থান নিলে তাকে ব্রিটেন হতে বের করার সুবিধা রয়েছে বলে জানায় একজন সরকারের মুখপাত্র। সেই আইনের ভিত্তিতেই সহজে স্টুডেন্ট,ভিজিটর কিংবা ওয়ার্ক পারমিটে থাকা ব্যক্তিদের যুক্তরাজ্য হতে বের করে দেয়া হতে পারে যদি কারো বিরুদ্ধে হামাসের পক্ষে অবস্থান নেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়।
যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি ঘোষণা দিয়েছে তারা একাডেমিক তদন্ত করবে হামাসের প্রতি বিদেশি শিক্ষার্থীদের সমর্থন প্রকাশ নিয়ে। ইউনিভার্সিটি গ্রুপ, জানিয়েছে ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্টুডেন্ট গ্রুপ মতামত প্রকাশ করেছে যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি ‘প্রতিশোধ’ ‘সম্পূর্ণ ন্যায়সঙ্গত’ ছিল।
এদিকে লন্ডনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ‘ফিলিস্তিনি সংগ্রাম’ এর সাথে সংহতি দেখানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন বলেও খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পায়।
বাকিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুরক্ষা ও গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক অ্যান্টনি গ্লিস বলেছেন, ‘এটি একটি চরম ভন্ডামি যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি শিক্ষাবিদ এবং শিক্ষার্থীদের একটি সন্ত্রাসী সংগঠনকে সমর্থন করার অনুমতি দেবে আবার সরকার বিদেশি শিক্ষার্থীদের উপর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলবে।
ইহুদি শিক্ষার্থী ইউনিয়নের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাসের খুনী ও বর্বর পদক্ষেপের সমর্থন কখনও ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না।
‘নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের ধর্ষণ, হত্যা ও অপহরণ কখনও বৈধ হতে পারে না।
শিক্ষা সচিব গিলিয়ান কেগান উপাচার্যদের কাছে চিঠি দিয়েছেন। তিনি ইহুদি শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যাম্পাস যাতে নিরাপদ থাকে সেই ব্যবস্থা নেয়ার কথা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। ইহুদি শিক্ষার্থীদের উপর কোনো ধরনের হামলা কিংবা হুমকি যুক্তরাজ্য সরকার বরদাস্ত করবে না বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী রবার্ট হাফন।
এম.কে
১৬ অক্টোবর ২০২৩