20.4 C
London
July 3, 2025
TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলের গণহত্যায় সহায়তাকারী ৪৮ প্রতিষ্ঠান চিহ্নিতঃ জাতিসংঘ দূতের প্রতিবেদন

অধিকৃত ফিলিস্তিন অঞ্চলে ইসরায়েলের অব্যাহত দখল ও গণহত্যাকে সহায়তা করা ৪৮টি আন্তর্জাতিক কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রানচেসকা আলবানিজ।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) জেনেভায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠান শুধু দখলদারিত্ব নয়, গাজায় চলমান গণহত্যার অর্থনৈতিক কাঠামোর অংশে পরিণত হয়েছে।

প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মাইক্রোসফট, অ্যালফাবেট (গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান), অ্যামাজন, আইবিএম, লকহিড মার্টিন এবং ব্ল্যাকরকসহ বহু প্রযুক্তি ও অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে এসেছে।
ফিলিস্তিনিদের বায়োমেট্রিক নজরদারি, তথ্য সংরক্ষণ, পূর্বাভাসমূলক পুলিশি এআই প্রযুক্তি এবং যুদ্ধ সরঞ্জাম সরবরাহের মাধ্যমে এসব প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলকে সমর্থন দিচ্ছে।

মাইক্রোসফট, অ্যামাজন ও গুগল ইসরায়েলকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ক্লাউডভিত্তিক প্রযুক্তির প্রায় পূর্ণাঙ্গ সরকারি ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে।

আইবিএম ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে এবং ফিলিস্তিনিদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণের কেন্দ্রীয় ডেটাবেজ পরিচালনা করছে।

পালানটিয়ার টেকনোলজিস এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে গাজায় টার্গেট শনাক্তে সহায়তা করছে, যার মধ্যে রয়েছে লেভেন্ডার, গোসপেল ও হোয়ার ইজ ড্যাডি নামের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সিস্টেম।

সিভিল প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যেমন ক্যাটারপিলার, লিওনার্দো, হুন্ডাই ও ভলভো ইসরায়েলকে ভারী যন্ত্রপাতি সরবরাহ করছে, যা পশ্চিম তীরে ঘরবাড়ি ধ্বংস ও অবৈধ বসতি গঠনে ব্যবহৃত হচ্ছে।

বুকিং ডটকম ও Airbnb ইসরায়েলি-অধিকৃত অঞ্চলে অবৈধ বসতির হোটেল ও ঘর তালিকাভুক্ত করে ভাড়ার মাধ্যমে মুনাফা করছে।

প্রতিবেদনে ড্রামন্ড কোম্পানি ও গ্লেনকোরকে কয়লা সরবরাহের মাধ্যমে ইসরায়েলের বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহায়তার জন্য দায়ী করা হয়েছে।

চীনা প্রতিষ্ঠান ব্রাইট ডেইরি ও মেক্সিকোর আরবিয়া অ্যাডভান্সের মালিকানাধীন নেটাফিম কৃষিখাতে অবৈধ বসতিতে অবকাঠামো ও সেচ প্রযুক্তি সরবরাহ করছে।

ফ্রান্সের বিএনপি পারিবাস, যুক্তরাজ্যের বার্কলেস এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকরক ও ভ্যানগার্ড ইসরায়েলের সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক বজায় রেখে যুদ্ধের অর্থায়নে ভূমিকা রেখেছে।

২০২৩ সালের অক্টোবরের পর ইসরায়েলের সামরিক ব্যয় ৬৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬.৫ বিলিয়ন ডলার, যার বড় অংশ এসেছে আন্তর্জাতিক কর্পোরেট মুনাফা ও বিনিয়োগ থেকে।

আলবানিজের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ধরনের আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে এবং সংশ্লিষ্ট নির্বাহীদের ব্যক্তিগতভাবে জবাবদিহির আওতায় আনা যেতে পারে।

তিনি কোম্পানিগুলোকে দখলদারিত্ব সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান এবং রাষ্ট্রসমূহকে এসব অপরাধ ঠেকাতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের জুলাইয়ের উপদেষ্টা মতামতের উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে সরে যেতে হবে।

আলবানিজ এই দখলদারিত্বকে ‘ঔপনিবেশিক বর্ণবাদী পুঁজিবাদ’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, এর সাথে সম্পর্কিত গণহত্যা কর্পোরেট মুনাফার মাধ্যমে পরিচালিত ও সহায়তাপুষ্ট।

সূত্রঃ আল জাজিরা

এম.কে
০৩ জুলাই ২০২৫

আরো পড়ুন

সংসদ ভেঙে দিয়ে কানাডায় আগাম নির্বাচনের ঘোষণা

গ্রিসের কঠোর অভিবাসন নীতিতে বিক্ষুব্ধ শরণার্থীরা

পদত্যাগ করে জেলেনস্কিকে ইউক্রেন ছাড়তে বললেন মাস্ক