ডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান থাকাকালে হারুন অভিযুক্তদের বরাত দিয়ে মনগড়া গল্প সংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেছেন। এছাড়া ডিবির অভিযানের বিষয়ে কোনো কর্মকর্তাদের মিডিয়াতে কথা বলতেও নিষেধ করেছিলেন তিনি।
ঝিনাইদহ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময় মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, এমপি আনারকে হত্যা করার পর তার মাংস আলাদা করে এতে হলুদ মেশানো হয়। যার কোনো প্রমাণ তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পাননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আনার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আসামিদের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে লাশ কেটে হলুদ মেশানোর বক্তব্য নেই। এমনকি মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও এমন কোনো তথ্য পাননি।’
ডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান থাকাকালে হারুন অভিযুক্তদের বরাত দিয়ে মনগড়া গল্প সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেছেন। এছাড়া ডিবির অভিযানের বিষয়ে কোনো কর্মকর্তাদের মিডিয়াতে কথা বলতেও নিষেধ করেছিলেন তিনি।
তারা জানান, হারুন সবসময় মিডিয়াতে ব্রিফ করতেন। অনেক ক্ষেত্রেই আলোচনায় থাকতে মিথ্যা গল্পও তৈরি করতেন তিনি। এতদিন গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা হারুনের ভয়েই নিশ্চুপ ছিলেন।
তবে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর হারুনের বিভিন্ন অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে মুখ খুলতে শুরু করেন গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা।
চলতি বছরের ২৬ জুন পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে আনার হত্যা মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। ওইদিন বিকেলে বিমানবন্দর এলাকায় একবার ব্রিফ করেন হারুন। পরে সন্ধ্যায় একই ইস্যুতে ডিবি অফিসে আবার ব্রিফ করেন তিনি। কিন্তু মিডিয়া কাভারেজ না হওয়ায় পরের দিন ফের মিডিয়া ব্রিফ করেন তিনি।
হারুনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এক ডিবি কর্মকর্তা বলেন, ‘হারুন স্যার মিডিয়া কাভারেজ পাওয়ার জন্য কিছু সাংবাদিকের সঙ্গে বেশ সখ্যতা তৈরি করেছিলেন। ব্রিফিংয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন করতে হবে সেটিও ওই সাংবাদিকদের বলে দিতেন তিনি।’
হারুন ওই সাংবাদিকদের বিভিন্ন সময় উপহার দিতেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
এম.কে
২০ আগস্ট ২০২৪