0.6 C
London
November 21, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

কমপ্লিট শাটডাউনে আগামীকাল সম্পূর্ণ বাংলাদেশ বন্ধ

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষে ‘খুনের দায়ে’ জড়িতদের বিচার ও সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে বৃহস্পতিবার ১৮ জুলাই সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারীরা। এই কর্মসূচিতে হাসপাতাল ও জরুরি সেবা ছাড়া সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোনো গাড়ি রাস্তায় চলবে না বলে জানিয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক।

বুধবার ১৭ জুলাই রাত পৌনে ৮টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তার ফেইসবুক আইডিতে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। পরে ওই বার্তা তিনি সাংবাদিকদের কাছেও পাঠান।

বার্তায় বলা হয়, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে উপর পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব, সোয়াটের ন্যাক্কারজনক হামলা, খুনের প্রতিবাদ, খুনিদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত ও এক দফা দাবিতে আগামীকাল ১৮ জুলাই সারাদেশে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করছি।

এতে আরও বলা হয়, শুধু হাসপাতাল ও জরুরি সেবা ব্যতীত কোনো প্রতিষ্ঠানের দরজা খুলবে না, অ্যাম্বুলেন্স ব্যতীত সড়কে কোনো গাড়ি চলবে না। জরুরি সেবার আওতায় গণমাধ্যমের গাড়ি ও সংবাদপত্র পরিবহনের গাড়ি বাধাহীনভাবে চলতে পারবে। সারাদেশের প্রতিটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানাচ্ছি আগামীকালকের কর্মসূচি সফল করুন।

শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা আপনাদেরই সন্তান। আমাদের পাশে দাঁড়ান, রক্ষা করুন। এই লড়াইটা শুধু ছাত্রদের না, দলমত নির্বিশেষে এদেশের আপামর জনসাধারণের।

নতুন কর্মসূচি ঘোষণার কয়েক মিনিট আগেই জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রীর এমন আহ্বানের পরও কেন নতুন কর্মসূচি জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা মনে করি, সরকার প্রধান বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের উপর গুলি চালানোর সাহস করত না। সেখানে একটা যৌক্তিক আন্দোলনে গতকাল ৭টা (সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী নিহত ৬ জন) লাশ পড়েছে।

তিনি বলেন, আজকে প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ, এমনকি হলের ভেতরে ঢুকে গুলি চালানো হয়েছে। এই নারকীয়তা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ হয়েছিল। এগুলো এখন রিপিট হচ্ছে।

২০১৮ সালে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র হাই কোর্ট অবৈধ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা দুই সপ্তাহ ধরে টানা আন্দোলন চালিয়ে আসছে। সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার পর মঙ্গলবার তা সহিংসতায় রূপ পায়। আগে কেবল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে দেখা গেলেও সোমবার থেকে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে যোগ দেয়। মঙ্গলবার তাদের সঙ্গে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদেরও দেখা যায়।

মঙ্গলবার সকাল থেকে তারা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। তাদের অবরোধের কারণে রাজধানী একপ্রকার অচল হয়ে পড়ে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশাপাশি দেশের এ দুই বড় শহরে রেলপথও অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা। সব মিলিয়ে নিদারুণ ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।

এই বিক্ষোভ-অবরোধের মধ্যে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকারসমর্থক সংগঠনের কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে শিক্ষার্থী, পথচারীসহ ছয়জন নিহত হন, আহত হন কয়েকশ মানুষ। এর মধ্যে চট্টগ্রামে তিনজন এবং ঢাকায় দুইজন এবং রংপুরে একজন করে মারা গেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া, রংপুর, গাজীপুর, রাজশাহী এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিজিবি নামানো হয়েছে।

নিহতদের গায়েবানা জানাজার কর্মসূচি পালন করা হয় বুধবার ঢাকাসহ সারাদেশে। এদিন গায়েবানা জানাজাকে ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারী মিছিলের চেষ্টা ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। এছাড়া ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে এদিনও বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনকারীরা।

সূত্রঃ ইত্তেফাক

এম.কে
১৮ জুলাই ২০২৪

আরো পড়ুন

ছাত্রদের রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা নিলো শাবিপ্রবি প্রশাসন

দূর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ আটক

এনায়েতপুরে পুলিশ হত্যা মামলায় যুবলীগ নেতা গ্রেফতার