জেরেমি করবিন ও জারা সুলতানা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছেন তাদের নতুন রাজনৈতিক দলের, যার নাম রাখা হয়েছে ‘ইয়োর পার্টি’। এই নতুন বামঘেঁষা রাজনৈতিক উদ্যোগকে ঘিরে ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোচনার জন্ম হয়েছে।
দলের ঘোষণা বিবৃতিতে তারা বলেন, “এখন সময় এসেছে এমন একটি রাজনৈতিক দলের, যা সাধারণ মানুষের, যা প্রোথিত থাকবে কমিউনিটি, ট্রেড ইউনিয়ন ও সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গে।” করবিন ও সুলতানার মতে, লেবার পার্টি এখন জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছে না।
এই নতুন দল নিয়ে কিয়ার স্টারমার নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টিকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দেন তারা — “বাস্তব পরিবর্তন আসছে।” প্রথম সম্মেলনেরও ঘোষণা এসেছে, যেখানে সদস্যরা নীতিমালা, নেতৃত্ব কাঠামো ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা ঠিক করবেন। যদিও ওয়েবসাইটে ‘ইয়োর পার্টি’ নাম থাকলেও সুলতানা পরিষ্কার করেছেন যে এটি চূড়ান্ত নাম নয়।
সম্প্রতি ‘Find Out Now’ পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, করবিন-সুলতানার দল ইতোমধ্যে ১৫% ভোটার সমর্থন অর্জন করেছে, যা বর্তমান লেবার পার্টির সমান। জরিপে রিফর্ম পার্টি ৩৪% ভোটে শীর্ষে, কনজারভেটিভ পার্টি রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে ১৭% নিয়ে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নতুন দল মূলত ইসলামপন্থী গাজা-সমর্থক স্বতন্ত্র এমপি ও তরুণ ভোটারদের কেন্দ্র করে গড়ে উঠছে। ১৮-২৯ বছর বয়সী ভোটারদের এক-তৃতীয়াংশই নতুন দলকে সমর্থন করছেন বলে জরিপে উঠে এসেছে।
জারা সুলতানা জানিয়েছেন, তাদের লক্ষ্য ২০-২৫ শতাংশ ভোটার সমর্থন অর্জন করা। তিনি বলেন, “লেবার পার্টি মৃত। এখন সময় একটি গণআন্দোলনের, যা ধনকুবের শ্রেণি ও তাদের প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর বিরুদ্ধে লড়বে।”
তবে দলের সূচনা ছিল বেশ বিশৃঙ্খল। সুলতানা লেবার পার্টি ছাড়ার ঘোষণা দেন করবিনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে, যদিও তখন করবিন আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো নতুন দল গড়ার ঘোষণা দেননি। দলীয় নেতৃত্ব নিয়ে অভ্যন্তরীণ মতবিরোধও দেখা দেয়, বিশেষ করে যৌথ নেতৃত্ব মডেল নিয়ে।
বামপন্থী ভোট বিভক্ত হয়ে গেলে তাতে কি ফারাজের লাভ হবে — এমন প্রশ্নে করবিন বলেন, “দেশজুড়ে স্বতন্ত্র বাম কাউন্সিলররা জনগণের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছেন। সেই কণ্ঠস্বরকে জোরালোভাবে তুলে ধরাই এখন আমাদের দায়িত্ব।”
নতুন এই রাজনৈতিক উদ্যোগ ইতোমধ্যে ৬৪,০০০-এর বেশি মানুষের সমর্থন পেয়েছে, যারা স্বাক্ষর দিয়ে জানিয়েছে যে তারা পার্টির জন্য কাজ করতে প্রস্তুত। সুলতানা এরই মধ্যে একটি অনলাইন ফান্ডরেইজিংও শুরু করেছেন।
যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে নতুন করে শক্তি সঞ্চার করছে এই দলটি — বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে। তবে এ দল লেবার থেকে কতটা ভোট কেটে নিতে পারে এবং কতটা প্রভাব ফেলবে আগামী নির্বাচনে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
সূত্রঃ দ্য এক্সপ্রেস
এম.কে
২৪ জুলাই ২০২৫